খুচরা বাজারে মসলার দাম চড়া

প্রকাশ: ২০১৬-০৯-১১ ১৬:৪৮:৫৪


maslaঈদুল আজহা সামনে রেখে গরম হয়ে উঠেছে মসলার বাজার। পাইকারিতে সামান্য বাড়লেও খুচরায় দেড় থেকে দুইগুণ দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। প্রতিবারের মতো এবারো ঈদে মসলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের পকেট কাটছে অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। আর হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, মসলার চাহিদা বেশি হয় কুরবানির ঈদে। তবে চাহিদা বাড়লেও দেশের পাইকারি বাজারে মসলার সংকট নেই। ফলে দাম বাড়ার কোনো যুক্তি নেই। বরং আগের চেয়ে মসলার দাম অনেকটা কম বলে জানান তারা।

রোববার রাজধানীর মালিবাগ, মুগদা, মতিঝিল, শান্তিনগর ও যাত্রাবাড়ী এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি জিরা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, তেঁজপাতা ২০০ থেকে ২২০, দারচিনি ৩০০থেকে ৩৫০, লবঙ্গ ১ হাজার ২০০থেকে ১ হাজার ৩০০, এলাচ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০, কালো গোলমরিচ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০, জয়ফল ৯০০ থেকে ১ হাজার, জৈত্রীক ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০, কিসমিস ৩০০ থেকে ৪৫০ , আলু বোখারা ৬৫০থেকে ৭০০, কাঠবাদাম ৬৫০ থেকে ৭০০ , পোস্তাদানা ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৮-৪২ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ ২৪-৩২ টাকা। প্রকারভেদে কেজি প্রতি দেশি রসুন কেজিপ্রতি ১৭০-১৯০ ও আদা ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মসলার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি জিরা ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, তেজপাতা ১৬০ থেকে ১৭০, দারচিনি ২৫০ থেকে ২৬০, এলাচ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০, কালো গোলমরিচ ৯০০ থেকে ৯২০, জয়ফল ৭০০ থেকে ৭৫০, জৈত্রীক ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০, কিসমিস ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়, আলু বোখারা ৫৫০ থেকে ৫৮০, কাঠবাদাম ৫৯০ থেকে ৬২০, পোস্তাদানা ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় ও সাদা গোল মরিচ ১ হ্জ্র২৫০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এবার পাইকারি বাজারে মসলার দাম বাড়েনি দাবি করে পাইকারি মসলা বিক্রেতা আরিফ হোসেন জাগো নিউজকে জানান, শুনেছি খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে মসলা বিক্রি করছে। আর এতে দোষ হচ্ছে পাইকারি ব্যবসায়ীদের। ক্রেতারা মনে করছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারে মনিটরিং কমিটি যদি সরেজমিনে মসলার বাজার পরিদর্শন না করে তাহলে তো অসৎ ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করবে। এটাই স্বাভাবিক।

মতিঝিলের মসলা ব্যবসায়ী শাহজাহান জানান, রোজায় মসলার দাম বাড়তি ছিল। তা আর কমেনি। এছাড়াও গত সপ্তাহে এলাচ, জিরা, আলু বোখারাসহ বেশ কয়েকটি মসলার দাম বেড়েছে। তাই আমাদের বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বাজারে মসলার দাম এখনো স্থিতিশীল। সরবারহ বেশি থাকায় ঈদে দাম বাড়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন তারা।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আদা, জিরা ও এলাচের দাম বেড়েছে। আর এক মাসের ব্যবধানে আদার দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এলাচের দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ।

যাত্রাবাড়ী বাজারের মসলা কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ফারুক আহমেদ জানান, জিরা কিনতে এসেছি; ২৫০ গ্রাম ইরানি জিরা ১৪০ টাকা চাচ্ছে। এক মাস আগেও ৮০ টাকায় কিনেছি। এছাড়াও আদার দামও কেজিতে ৪০ টাকা বেশি নিচ্ছে। আর এলাচের দাম আকাশ ছোঁয়া।

তিনি বলেন, ঈদের আগে সব সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়- বাজারের ভোগ্যপণ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। কিন্তু তার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায় না। ফলে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়।

ফারুক আরো বলেন, আমাদের আয় সীমিত। বাজেট করে খরচ করতে হয়। কোনো পণ্যের দাম বেড়ে গেলে বাড়তি টাকা খরচ হয়। যার কারণে বিপাকে পড়তে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস