ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনের দাবি গ্রাহকদের
সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৪-০৮-২৪ ১৫:৪১:৪৪
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, ইসলামী ব্যাংক চালাতে হলে ইসলাম লাগবে। ব্যাংকটি যারা প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা ইসলামের খেদমত করতে চেয়েছে। বিদেশী যেসব বিনিয়োগকারী এসেছিল তারাও ইসলামের খেদমত করার জন্য এসেছিল। কিন্তু যখন তারা দেখেছে ব্যাংকটি অন্যায়ভাবে দখল হয়ে ব্যাংক থেকে ইসলাম বিদায় নিয়েছে, তখন তারাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই আমি গভর্নর কে অনুরোধ করব, ২০১৭ সালের আগে যারা বোর্ডে ছিলেন অথবা যাদের মধ্যে ইসলাম রয়েছে, এমন যোগ্য ব্যক্তিদেরকে দিয়ে ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করুন।
শনিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বানীতে শরিয়া ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা অবৈধ প্রভাব থেকে রক্ষার লক্ষ্যে আয়োজিত ‘গ্রাহক সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিল তারা কর্মীদের কম বেতন দিতেন, কম খরচ করতেন। এভাবে তারা অনেক সম্পদ জমা করেছিল যাতে ইসলামী অর্থনীতির শক্ত ভিত্তি গড়ে ওঠে। এটিই ইসলামী ব্যাংকের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। লুটেরা গোষ্ঠী যখন দেখলো এখানে অনেক সম্পদ জমা আছে তখন তারা সেটি দখলের পায়তারা শুরু করে। একে একে সবগুলো ইসলামী ব্যাংক দখল হয়ে গেল। এক সময় ইসলামী ব্যাংক অন্য ব্যাংককে ধার দিত। এখন ব্যাংকটিকে ধার করে চলতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। এভাবে বেশি দিন চলতে পারবেনা। তাই গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে হবে। যদি তারা দেখে আমানতের নিরাপত্তা রয়েছে, তাহলে আবার ইসলামী ব্যাংকে টাকা রাখতে শুরু করবে। তারা দেখবে না কত মুনাফা দেওয়া হল ।
প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাকদের নিয়ে আয়োজিত ‘গ্রাহক সমাবেশে’ ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন। এ সময় এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ- বিকেএমইএসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে কোন ব্যাংক ইসলামি ব্যাংকের এলসি নেয় না। এটি উদ্বেগজনক। আমরা এর সমাধান চাই। একসময় ইসলামী ব্যাংকের নাম শুনলে বিনা প্রশ্নে এলসি গ্রহণ করা হতো।
তারা বলেন, ইসলামি ব্যাংককে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আগের ব্যবস্থাপকদের পুনর্বহাল করতে হবে। কারণ ১৬ সালের পরে ইসলামি ব্যাংকের কোন সফলতা নেই। আছে লুটপাটের ইতিহাস।
এসময় তারা আরও বলেন, ‘কোনো অনইসলামিক লোকের কাছে ইসলামি ব্যাংক নিরাপদ নয়। এটি ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। তাই ঈমান-আকিদা সম্পন্ন লোক দিয়ে এটি পরিচালনা করতে হবে।
তারা বলেন, বর্তমানে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি সুদি ব্যাংকিংয়ে পটু। তাকে দিয়ে ইসলামি ব্যাংক চলতে পারে না। তিনি বিগত সরকারের সুবিধাভোগী। তিনটি সুদভিত্তিক সরকারি ব্যাংকের এমডি ছিলেন। তিনি এস আলমের পেইড এজেন্ট।’
নবগঠিত বোর্ডের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যে বোর্ড করেছে এটি দিয়ে কোন উন্নতি হবে না।
সভা শেষে গভর্নর বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে বোর্ড পুনর্গঠন করার দাবি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, যারা ইসলামি ব্যাংক তৈরি করেছে তাদের কাছেই ব্যাংকটি নিরাপদ।
গ্রাহক সমাবেশ থেকে দাবি করা হয়, ‘ লুটেরাদের বিচার করতে হবে। যাদেরকে অবৈধভাবে ব্যাংক থেকে তাড়ানো হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। এস আলমের সব কর্মীদের বাদ দিতে হবে। এরা ব্যাংক পরিচালনায় অযোগ্য।’
একই সাথে ইসলামী ব্যাংকিং আইন প্রণয়নের জন্য জোর দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘শুধুমাত্র গাইডলাইন দিয়ে এত বড় ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা চলতে পারে না। ‘
বিএইচ