সেই ভিডিওটি আইএসের কাছে পাঠান মারজান!

প্রকাশ: ২০১৬-১০-০২ ১১:৩৬:৩১


মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাংলাদেশের ওপর কয়েকদিন আগে যে ভিডিও প্রকাশ করে সেটি বাংলাদেশ থেকে শীর্ষ জঙ্গি নেতা নুরুল ইসলাম মারজান পাঠিয়েছেন বলে দাবি করছে পুলিশ।
জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নজরদারি করা মার্কিন প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের ওয়েবসাইটে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ‘আইএস রিলিজেস ফাস্ট ভিডিও ফ্রম বাংলাদেশ, ফোকাসেস অন ঢাকা এটাকার্স’ শীর্ষক এই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
বাংলা ভাষায় তৈরি ওই ভিডিওতে গত জুলাই মাসে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন পাঁচ জঙ্গির কথাবার্তা, হামলার ঘটনা এবং আইএসের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া, কয়েকজন ধর্মীয় নেতাসহ বেশ কয়েকজনের ব্যাপক সমালোচনা করে বক্তব্য দেয়া হয় ওই ভিডিও ফুটেজে। অবশেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এই ভিডিও ফুটেজের উেসর সন্ধান করতে পেরেছে বলে জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যেদিন ভিডিওটি প্রকাশ হয়েছিল তার ঠিক একদিন আগে সেটি বাংলাদেশ থেকে আইএসের কাছে পাঠায় মারজান। এই ভিডিওটি জঙ্গিদের কল্যাণপুরের আস্তানায় ধারণ করা হয়। ওই জায়গায় পেছনে আইএসের পতাকা নিয়ে এবং অস্ত্র হাতে জঙ্গিদের ছবিও তোলা হয়। যে ছবিগুলো ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিছু ছবি সাইট ইন্টেলিজেন্স থেকেও প্রকাশ করা হয়েছে। ওই ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেই মূলত জঙ্গিদের পরিচয় শনাক্ত করেছিল স্বজন ও বন্ধুরা। পরে গোয়েন্দারাও তদন্ত করে নিশ্চিত হন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাদের নাম বলা হয়েছে মূলত এরাই তারা।
১৪ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশে গুলশান হামলার ঘটনায় নিহত পাঁচজন জঙ্গি কালো পাঞ্জাবি এবং মাথায় বিশেষ ধরনের স্কার্ফ পরে আইএসের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। তারা একজন করে কথা বলছেন, তখন তাদের হাতে একে-৪৭ রাইফেল ও ছুরি দেখা যায়। তারা কোরআন-হাদিস থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলা করার পক্ষে তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। তবে এই ভিডিও নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই ঢাকার অভিজাত গুলশান এলাকার হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা সবাইকে জিম্মি করে ২০ জনকে হত্যা করে। এর মধ্যে বেশির ভাগই বিদেশি। এর মধ্যে ৯ জন ইতালির নাগরিক, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয়। বাকি তিনজন বাংলাদেশি। অভিযানে পাঁচ হামলাকারীকে হত্যা করা হয়। এছাড়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন। এরপর কল্যাণপুরে জঙ্গিদের আস্তানায় পুলিশের অভিযানে ৯ জন মারা যায়। এছাড়া অভিযানে মিরপুরের রূপনগরে একজন, নারায়ণগঞ্জে তিনজন ও আজিমপুরে একজন জঙ্গি মারা যায়।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস