গণতন্ত্র ডটকম থেকে মাইগ্রেন্টওয়াচ

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অকুতোভয় সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদের লড়াই

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৪-০৯-১৬ ০১:২৩:৪৮


বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্বাচনী জালিয়াতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে লড়ে গেছেন ইউরোপ প্রবাসী সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ। দেশের বাইরে থেকেও দেশের প্রতি ভালোবাসার টান থেকেই একের পর এক লড়াই চালিয়েছেন তিনি। প্রবাস থেকে নিজ ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন তিনি।

২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে খুলনা-১ আসনে মোট ভোটারের চেয়ে ২২,৪১৯ ভোট বেশি পড়েছে, ’শিরোনামে গরমিল’- এর খবর প্রকাশিত হওয়ায় দু’জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়। প্রবাস থেকে খুলনার সাবেক ডিসি হেলালের ভুল ধরিয়ে দিয়ে সেই ভুলের ভিডিও তার গণতন্ত্র ডট কম পেজে সবার আগে আপলোড দিয়ে হাসিনা সরকারের ভোট জালিয়াতির চিত্র দেশে ও বিদেশে তুলে ধরেন এই সাংবাদিক।

এর আগে তার আলোচিত কাজ আব্বু তুমি কান্না করতেছো যে… কক্সবাজারের একরামের খুনি র‍্যাবের মেজরের ছবি তার পেজে পোস্ট করেন। নওগাঁয় নাজমুস সাকিব নামে র‍্যাবের আরেক মেজরের হেফাজতে একজন নারী মারা যান। র‍্যাবের ওই মেজরের ছবিও পোস্ট করে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে চাপ তৈরি করে নেতিবাচক কাজ পরিহার করার জন্য প্রবাস থেকে জনমত তৈরি করেন সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ। ওই সময় দেশে বা প্রবাসে থেকে এভাবে সাহসী কাজ করতে কেউ এগিয়ে আসেননি। যদিও পরবর্তীতে বিদেশি মিডিয়ায় আয়না ঘরসহ র‍্যাবের অফিসারদের নিয়ে বেশকিছু ডকুমেন্টারি প্রচার করা হয়। তবে শুরুটা করেছিলেন সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ ফ্রান্স থেকে।

ইউরোপ থেকে অনেক সাহসী কাজ করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ। কোনোদিন জানান দেননি। প্রচার বিমুখ সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ নিরবে নিভৃতে থেকে কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন। তার লড়াই শুরু ২০১৮ সাল থেকে গণতন্ত্র ডট কম পেজ তৈরি করে। ফেসবুকের রেস্ট্রিক্টেডের কারণে নাম পরিবর্তন করে গণতন্ত্র ডটকম পেজ থেকে পরিবর্তন করে মাইগ্রেন্টওয়াচ নাম দিয়ে প্রবাস থেকে দেশের জন্য লড়াই চালিয়ে যান সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ। এক পর্যায়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার পেজ ও ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দিলে রেসিডেন্ট কার্ড ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাঠিয়েও কোনো সমাধান না পওয়ায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে এই বলে হুমকি দেন যে, যদি আমার আইডি ও পেইজ চালু না হয় মনে করবো ফেসবুক হাসিনা সরকারের দালালি করে। পরে পেজ চালু হওয়ার পর একটি নিউজ ওয়েবসাইট তৈরি করে স্বৈরশাসক হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান এই প্রবাসী সাংবাদিক।

ফ্রান্স প্রবাসী সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ বাণিজ্য প্রতিদিনকে বলেন, ২০০০ সালের আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আমার আগ্রহ এবং অফিসিয়াল সিদ্ধান্তে আমাকে চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিনিধির দায়িত্ব দিয়ে বদলি করা হয় খুলনায়। তার কিছুদিন আগে সন্ত্রাসীদের গুলিতে জনকণ্ঠের বিশেষ সংবাদদাতা শামছুর রহমান কেবল যশোরে নিহত হন। ওই ঘটনার পর পরই মানবজমিনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিনিধিকে পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে বাদ দেয়া হয় এবং সেখানে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে আমাকে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, আমি খুলনায় যোগদানের দু’দিন আগে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঘোষিত মেয়র প্রার্থী এস এম এ রব সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। টালমাটাল অবস্থা তখন খুলনার। প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসী-চরমপন্থিদের উৎপাত। আওয়ামী লীগ তখন ক্ষমতাসীন দল। আর আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের নির্দেশেই আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে- প্রয়াত মেয়র প্রার্থী রবের ছেলে মিঠুর সাক্ষাৎকার মানবজমিনে ছাপিয়েই আমার খুলনা মিশন শুরু হয়েছিল। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আগে বানিয়াচর গির্জা, শেখ হেলালের জনসভায় বোমা বিস্ফোরণ এবং পরে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চরমপন্থিদের পৃথক প্রশাসন নিয়ে ধারাবাহিক সিরিজ রিপোর্ট করেছি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

বিগত চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৩ সালের মার্চ মাসে বাগেরহাটের হিন্দু সংখ্যালঘু মেয়ে ছবি রানী লাঞ্চিত ও আহত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই সময় তাকে খুলনায় দেখতে যান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ছবি রানীকে খুলনা থেকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার নামে রাজনীতি করার জন্য তার মায়ের কাছে প্রস্তাব দেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দিলেন ছবি রানীর মা। আর সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ছিলাম আমি। বাইলাইনে আমার করা সেই কথোপকথনের রির্পোট তখন প্রকাশিত হয়েছিল একমাত্র দৈনিক পত্রিকা মানবজমিনে। ওই রিপোর্টের পরই ভেস্তে যায় ছবি রানীকে নিয়ে হাসিনার তখনকার সংখ্যালঘু রাজনীতি প্রজেক্ট! আর সেই শহরেই আমাকে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হয় আক্ষেপ করে বলেন এই সাংবাদিক।

সাংবাদিক নিয়াজ জানান, চরমপন্থি দল জনযুদ্ধ প্রধান তপনের প্লাস্টিক সার্জারির রিপোর্ট করায় তাদের আদালতে আমার ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। তবে রিপোর্টগুলো পাঠকদের কাছে গ্রহণযোগতা পেয়েছিল। এসব রিপোর্ট করার কারণে আমার জীবনের ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছিল খুলনায়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি সন্ত্রাসীরা বোমা হামলায় হত্যা করে আমার সেখানকার সহকর্মী (পরে একুশে পদক পাওয়া) খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মানিক সাহাকে। ওই ঘটনার পর আমাকেও হত্যার জন্য সিমেট্টি রোডের আমার তখনকার বাসায় খোঁজাখুঁজি করেছিল সন্ত্রাসীরা।

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে খুলনায় জিডি করেছিলাম। পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। উপরন্তু খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম হত্যা রহস্য ও শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি শিরোনামে অনুসন্ধানী রাজনৈতিক রিপোর্ট করায় স্থানীয় সাবেক মেয়র কাজী আমিনুল হক প্রধান সম্পাদকসহ আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন। জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আইনি লড়াই করেছি। মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আমার কোনো টেনশন ছিল না। তবে ভয় ছিল; এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ আমাকে মেরে দিয়ে কাজী আমিনুল হককে ফাঁসাতে পারে। কারণ এমন চর্চা তখন খুলনায় চলছিল। এতে আমার জীবনের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে খুলনার সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু ভাই ও শেখ বেলাল উদ্দিন (পরে বোমা হামলায় নিহত) কেএমপি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আমার নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। একইসঙ্গে তারা আমাকে এই বলে আস্বস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন- ভয় যেনো না পাই। কিন্তু কেএমপি আমার খোঁজ-খবর না নেয়ায় খুলনা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে ভালোবাসার শহর খুলনা থেকে ২০০৪ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকা অফিসে যোগদান করি। ঢাকায় বিভিন্ন বিটে কাজ শেষে আমাকে বিএনপি বিটের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওয়ান ইলেভেনের অস্থির সময় কারাগারে নেয়া হয় দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে। আওয়ামী লীগ বিটের তৌফিক উদ্দিন (প্রয়াত) কে নিয়ে আমাদের একটি আলোচিত রিপোর্ট ছাপা হয়েছিল কারাগারে কেমন আছেন হাসিনা-খালেদা। ২০০৭ সালের মার্চ পর্যন্ত দৈনিক মানবজমিনের রাজনৈতিক বিটে কাজ করেছি। সেনা সমর্থিত সরকার মিডিয়ার উপর চাপ তৈরি করলে মানবজমিন পত্রিকা ছেড়ে মিডিয়া ব্যবসা শুরু করি। পাশাপাশি ২০০৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আমার সম্পাদনায় বের হয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। ২০১১ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটি আমার হাতে ছিল। পরে মালিকানা বদল হয়। সাংবাদিকরা খুব একটা অন্য পেশায় টিকতে পারেন না তাই ২০১৩ সালের জুলাই মাসে সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে ফের যোগদান করলাম দৈনিক মানবজমিনে।

তিনি জানান, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে রিপোর্ট করতে গিয়েছিলাম চাঁদপুরে। ছিঁচকে চোর থেকে শতকোটি টাকার মালিক ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ রিপোর্টটি এলাকাবাসীর কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। ওই সময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে তার জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমি তা সবিনয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। ক্ষমতা বা লোভ-লালশার কাছে আত্মসমর্পণ না করে।

এই সাংবাদিক জানান, জাপা চেয়ারম্যান প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সিএমএইচ-এ আটক করে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে রাখতে আসন ও প্রার্থীভেদে ২৫ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত একটি বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে বিলি করা হয়। আমার অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া যায়। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের দিন আমার করা এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে তৈরি করা হয় নতুন দল বিএনএফ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য। তবে মজার বিষয় ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোট দিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। একজন রিপোর্টার হিসেবে দেখলাম; এভাবেই বদলে গেল দেশের গণতন্ত্র! বাকিটা ইতিহাস এবং প্রিয় পাঠক আপনাদের সবারই জানা।

২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীসহ ১৬০০ মন্ত্রী রাজনীতিক ও আমলার দায়মুক্তি শিরোনামে আমার করা একটি অনুসন্ধানী লিড রিপোর্ট প্রকাশিত হয় মানবজমিনে। দুদক পায় দায় মুক্ত কমিশনের তকমা। এর আগে ২০১৪ সালের ১৫ মার্চ সকাল ১০টা। তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম অশ্বদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলা নির্বাচন কাভার করতে যওয়ায় তার ব্যক্তিগত সহকারী মোশাররফ হোসেন আমার পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করতে উদ্যত হয়। আমার মোবাইল ফোনও কেড়ে নিয়েছিল যাতে আমি অফিসে যোগাযোগ করতে না পারি। বলেছিল, এক মিনিট কেন্দ্রে থাকলেই লাশ পড়বে। সাংবাদিক মারলে কি হয়? আমাকে টানা-হেঁচড়া করে তার ক্যাডারবাহিনী। এসময় স্থানীয় লোকজন, ভোটার ও সাংবাদিক সহকর্মীদের সহযোগিতায় আমি কোনোরকমে পালিয়ে জীবন বাঁচাই। পরদিন এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশের কারণে দৈনিক মানবজমিনের রেলওয়ের বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়া হয়। এ কারণে আমার কি কোনো শাস্তি হয়েছিল? এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না! পরে আমাকে রিপোর্টিং টিম থেকে সরিয়ে মফস্বল বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়। মফস্বল বিভাগে এসে ঢাকার বাইরে থেকে সংবাদদাতাদের পাঠানো বস্তুনিষ্ঠ ও সাহসী রিপোর্ট প্রকাশের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পারলাম না! নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর নামে দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক ও আমিসহ চার সহকর্মীকে চিরকুট পাঠিয়ে হুমকি দিয়েছিল। এ ঘটনা ঘটে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর। এ বিষয়ে পরদিন ২ নভেম্বর সাধারণ ডায়েরি করে মানবজমিন। নিরাপত্তা দেয়া তো দূরের কথা, এ বিষয়ে পুলিশ কোনো তদন্ত করেনি; খোঁজও নেয়নি মানবজমিন পরিবারের সদস্যদের।

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর পরই ক্ষমতায় লাইফ টাইম থাকার জন্য বিশেষ একটি সংস্থাকে দিয়ে এভাবেই হুমকি ও ভয়-ভীতির সংস্কৃতি চালু করা হয়। পাশাপাশি সাংবাদিকদের সাংবাদিকতা পেশা ছেড়ে দিতে বা সেল্ফসেন্সরশিপে যেতে বাধ্য করা হয়। অনেকের মতো আমিও প্রিয় দেশ ও প্রিয় পেশা ছেড়ে হতাশা নিয়ে একপর্যায়ে নির্বাসিত জীবন বেছে নিয়েছি।

সাংবাদিক নিয়াজ মাহমুদ বলেন, দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার পর এমন দিনও গেছে চাকুরি শেষ করে বাসায় ফিরে আপডেট খবর জানাতে গিয়ে ঠিকমতো ঘুমোতে পারিনি। চাকুরিতে কয়েকদিন অনুপস্থিতও ছিলাম। দ্বিতীয় বিপ্লব সফল হওয়ার পর অনেকে মেসেজ দিয়ে জানতে চেয়েছেন, দেশে ফিরবো কবে? আবার অনেকে বলেছেন, এই নতুন বাংলাদেশের পেছনে আপনারও অনেক অবদান আছে। তবে ইউরোপের অনেক দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের টিমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, দেশ যখন বিচ্ছিন্ন ছিলো আপডেট ও সঠিক তথ্য দেয়ায়। আমি মনে করি আমাদের দেশে ফেরাটা এই মুহুর্তে জরুরি না। যে জন্য দ্বিতীয় বিপ্লব হয়েছে রাস্ট্র সংস্কার ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে পেলেই আমাদের লড়াই ও স্বপ্ন সার্থক হবে। এই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গু বা হাসপাতালে ধুকঁছেন! রাস্ট্র তাদের চিকিৎসাসহ যথাযথ মূল্যায়ন করলেই আমরা খুশি। এসব কী আমাদের খুব বেশি চাওয়া?