রিজার্ভ থেকে ঋণ নেবে সরকার: অর্থমন্ত্রী

আপডেট: ২০১৬-১০-১৯ ১০:১৫:০৮


abul-malঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ফলে আজ আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ৩১ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। এখন এই অর্থের সদ্ব্যবহারের সময় এসেছে। তাই আমরা ভাবছি এটাকে কিভাবে বিনিয়োগে নিয়ে আসা যায়। তিনি বলেন, আমরা চিন্তা করছি, আপনাদের কাছ থেকে ঋণ নেব।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজার্ভের টাকা ব্যবহার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনাদের টাকা আপনাদেরই থাকবে। আমরা শুধু আপনাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঋণ নেব। সে অর্থ  দেশের উন্নয়নে মেগা প্রকল্পে  তা ব্যবহার করব। এসব প্রকল্পের সাফল্য বা ব্যর্থতার বিষয়ে দায় দায়িত্ব আমাদের। আপনাদের টাকার কোনো ক্ষতি হবে না। যে অর্থ ঋণ নেওয়া হবে তার লভ্যাংশও আপনাদের দেওয়া হবে। এবছর থেকে সে কার্যক্রম শুরু হবে কিনা বলা যাচ্ছে না। তবে আগামী বছর থেকে সুনিশ্চিতভাতে তা ব্যবহার করা হবে। আর বাজেটেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট উল্লেখ থাকবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন,  দেশ থেকে যারা বিদেশে যান, সেসব জায়গায় তারা কাজ করেন। সেসব জায়গায় তাদের বিশেষ দক্ষতা নেই। আমরা যদি দক্ষতা দিতে পারি তাহলে দুদিক দিয়ে সুবিধা হবে। প্রথমত, তাদের আয় বাড়বে, দ্বিতীয়ত, দেশের আয়ও বাড়বে। তিনি বলেন, ৬৫ হাজার জনশক্তিতে দক্ষ জনশক্তিতে পরিনত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাকে ব্যহত করার জন্য কোন উদ্যোগই সফল হবে না। হরতাল, ধর্মঘট সমাজ প্রত্যাখ্যান করছে। সেহিসাবে বলা যায় অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবেই। আর আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানো ২৬ প্রবাসী, বন্ডে বিনিয়োগকারী পাঁচজন এবং চারটি অনিবাসী বাংলাদেশি মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউজকে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে প্রবাসীদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদান এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে অধিক পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যেই আজকের এ আয়োজন। আপনাদের এই অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি আমরা দিচ্ছি, তা একেবারেই সামান্য।
প্রবাসীদের হুন্ডির মাধ্যমে টাকা না পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে এই অর্থের অংশ চোরাচালান, মাদক ব্যবসাসহ জঙ্গি অর্থায়নে ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশ বাংকের ডেপুটি গর্ভর এস কে সুর চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে তাতে দেশের অনেক উপকার হয়। আর অবৈধ পথে অর্থ পাঠালে তাতে একদিকে দেশের ক্ষতি হয় অন্যদিকে জঙ্গী অর্থায়ন ও মানি লন্ডারিংয়ের পথে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কষ্টার্জিত অর্থ যাতে জঙ্গীবাদে ও মানি লন্ডারিংয়ে না যায় সেজন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান রহমান, জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম, ব্যাংক এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার ব্যাংক লিমিটেডের বাংলাদেশ আবরার এ আনোয়ার, ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ হাউজের চেয়ারম্যান ইদ্রিস ফারাজী, প্রবাসী এসএম ফারুক তমাল, দেওয়ান সাদেক আহসান ও মাহতাবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।