রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প সরিয়ে নিতে ইউনেস্কোর আহ্বান
আপডেট: ২০১৬-১০-১৯ ১৫:৩৯:১১
রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার এবং ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনসারভ্যাশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন)। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
খবরে বলা হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে এই এলাকার সুরক্ষার বিষয়টি মূল্যায়নে একটি পর্যবেক্ষণ মিশন চালায় ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার এবং আইইউসিএন। চলতি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার এবং আইইউসিএনের ওই প্রতিবেদন বলা হয়, নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াটবিশিষ্ট সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টটি বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যা বনটির জন্য একটি চরম ঝুঁকিস্বরূপ। তাই এ প্রকল্পটি বাতিল করে কোনো উপযোগী স্থানে তা স্থানান্তরের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
প্রতিবেদন বলা হয়, সুন্দরবন ও সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের প্রতি ‘হুমকিস্বরূপ’। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ম্যানগ্রোভ বন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। এর আগে ২০১৫ সালের মার্চ মাসে ইউনেস্কোর বার্ষিক সাধারণ সভায় সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, বনের ভেতর নৌ-চলাচল, আশপাশে শিল্প কারখানা ও শ্যালা নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে উদ্বেগ জানানো হয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচল বৃদ্ধি পাবে। বাতাসের মাধ্যমে প্রকল্পের কয়লা দূষণ ছড়িয়ে পড়বে। বর্জ্রপানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, দূষিত ছাইয়ের পরিমাণ বাড়বে। এছাড়া ক্রমবর্ধমান শিল্পকারখানা এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগত নির্মাণের প্রভাবও পড়বে ওই্ এলাকায়।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র বরাবর পাঠাতে অনুরোধ করা হয়। যা ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম অধিবেশনে পরীক্ষা করা হবে।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার এবং আইইউসিএনের মন্তব্য হলো, রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করতে হবে এবং কোনো একটি উপযুক্ত জায়গায় এটি সরিয়ে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, দ্য বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) যৌথ উদ্যোগে ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি এবং বাংলাদেশের পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ২৯ মার্চ একটি যৌথবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির বিষয়ে চুক্তিতে সই করেছে।
২০১৭ সালের মধ্যেই ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিবেশবাদীদের চাপের মুখে দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্তুষ্ট করতে না পারায় এই প্রকল্পের কাজ এত দীর্ঘায়িত হয়েছে। আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে।