৩০ শতাংশ মানুষ অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ করছে: ডব্লিউএফপি
আপডেট: ২০২৪-১০-১৩ ১৪:২৬:৩৩
বাংলাদেশে ২০ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সিলেট ও বরিশাল অঞ্চলে এ হার সবচেয়ে বেশি, ২৪ শতাংশ। আর দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে প্রয়োজনের চেয়ে কম খাদ্য গ্রহণ করছে । জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) প্রকাশিত এক নিয়মিত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
দেশের আট বিভাগের ১ হাজার ২০০ মানুষের ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে নিয়মিত প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ডব্লিউএফপি। সেপ্টেম্বর শেষে দেশে খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গত সপ্তাহেই এটি প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, দেশের সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষি ও সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সংস্থান করতে পারছে না প্রতি ১০ জনের মধ্যে তিনজন বা ৩০ শতাংশ। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে এ হার প্রায় ৩৬ শতাংশ। খাদ্য ব্যয় সংকোচনমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে ২৯ শতাংশ মানুষ। আর সার্বিক জীবন-জীবিকায় ব্যয় সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে ৭১ শতাংশ মানুষ।
খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার ধারাবাহিকতায় দেশে অপুষ্টি ও রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো কম খাবার গ্রহণের ফলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। পুষ্টিহীনতা বেড়ে যায়। এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও কমে যায় রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। ফলে নানাবিধ রোগ-ব্যাধির প্রকোপও বাড়ে।
শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার হার তুলনামূলক বেশি বলে বিভিন্ন সময় সরকারি-বেসরকারি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সর্বশেষ সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেশে ১৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। তাদের ওপরই মূল্যস্ফীতির চাপ ও খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার সংকট সবচেয়ে মারাত্মক আকারে জেঁকে বসেছে। আবার দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারীদের হারের চেয়ে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুক্তভোগীর হার বেশি। এর অর্থ হলো দারিদ্র্যসীমার ওপর অবস্থানরতরাও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে ভুগছে।
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন বলছে, সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। ফলে নিম্ন আয়ের প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ৫৪ শতাংশ পরিবার খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার কথা বলছে। যার প্রভাবে ৫৯ শতাংশ পরিবারের ব্যয় বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আবার ৩৭ শতাংশ পরিবারের আয় কমে গেছে। বন্যা ও বন্যা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে শ্রমজীবী মানুষের ওপর।
তবে এর মধ্যেও আশাবাদী অর্থনীতিবিদদের অনেকে। তাদের ভাষ্যমতে, সাম্প্রতিক বন্যার প্রকোপ কমে আসার পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে এলে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা কমে আসবে বলে প্রত্যাশা তাদের।
এনজে