ভুয়া প্রশ্ন ৩ লাখ টাকাতেও বিক্রি হয়: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ: ২০১৬-১০-২৬ ১৭:২৩:০৮


nahidমূল প্রশ্ন ‘ফাঁস করতে না পারলেও’ ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন তিন লাখ টাকায় বিক্রি হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বুধবার সচিবালয়ের এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিবদের বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করার ‘কিছু পেশাদার লোক’ আছে, তারা দীর্ঘদিন থেকে এ কাজ চালিয়ে আসছে। “কিছু লোক আছে মাঝে মাঝে যুক্ত হয়, এরা দুই রকমের বেনিফিট নিতে চায়।” তবে কবে, কারা, কোন পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন এত টাকায় বিক্রি করেছে- সে তথ্যক মন্ত্রী দেননি।

নাহিদ বলেন, “যারা পেশাদার, তাদের চিহ্নিত করতে বিজি প্রেসকে আমলে নেই, তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন লিংক বের করতে পারি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের লিংক করে তাদের আয়ত্বের মধ্যে নিয়ে আসে। দুই-একজন যারা আছেন, তারাও দৃষ্টির মধ্যে চলে এসেছে।” নাহিদের ভাষায়, এই প্রতারক চক্রের একটি উদ্দেশ্য হল ‘প্রশ্ন ফাঁস করে কিছু ইনকাম’ করা। আবার সরকারকে ‘রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন এবং শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ’ করতেও প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা হয়।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন সত্য-মিথ্য দুটোই খুব সহজে প্রচার করা যায় মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, “… দেখা যাচ্ছে, আসল প্রশ্ন যেহেতু বের করতে পারে না তাই নকল প্রশ্ন বের করছে। “ভর্তি পরীক্ষার একটি চক্রকে তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ধরেছেন, যারা ভুল প্রশ্ন প্রচার করেছে। ইন্টারেস্টিং বিষয় হল ওই প্রশ্নই তারা বিক্রি করেছে পাঁচ হাজার থেকে তিন লাখ টাকায়। ভুল প্রশ্ন, বানানো মিথ্যা বিষয়।” জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্যশ বুধবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই সভা করেন নাহিদ। এবার জেএসসি-জেডিসির প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ‘সম্ভবনা নেই’ দাবি করে তিনি বলেন, “বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি এখন আর আগের মত নেই, বলা যায় নকলমুক্ত পরীক্ষা। তবে ছোটোখাটো ভুলত্রুটি থাকতে পারে, সেটা অন্য জিনিস।”

যারা ‘ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে’ তাদের সবাইকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, “কোনঠাসা করে ফেলা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে যারা জড়িত থাকতে পারে সবার তালিকা করা হয়েছে। এসব করে কেউ পার পাবে না, ধরা পরতেই হবে।” কিছু শিক্ষকও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ কেউ ধরাও পড়েছেন। কিছু শিক্ষক নজরদারির মধ্যে আছেন। কোচিং সেন্টারগুলোতেও নজরদারি করা হচ্ছে। “আমরা খুবই দুঃখিত হই, যখন শুনি যে আমাদের শিক্ষকরাও এসব কাজে জড়িত হয়ে পড়েন। এ কারণে পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ কমিয়ে দিয়েছি।”

আগামী ১ থেকে ১৭ নভেম্বর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হবে। এবার দেশের দুই হাজার ৭৩৪টি কেন্দ্রে ২৪ লাখ ১০ হাজার ১৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবে। এর মধ্যে ১১ লাখ ২৩ হাজার ১৬২ জান ছাত্র এবং ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৩ জন ছাত্রী। আট বোর্ডের অধীনে এবার জেএসসিতে ২০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩৪ জন এবং মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে জেডিসিতে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৭২ জন পরীক্ষা দেবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান। পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নিজেদের প্রস্তুত কর, অন্য কোনো দিকে মন দেবে না।” পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ফল ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস