মিরাজের বিশ্বরেকর্ড

প্রকাশ: ২০১৬-১০-৩০ ১৮:৫৭:০৮


miraj১৮৮৭ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ২০ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান তরুণ জন জেমস ফেরিসের। ক্যারিয়ারে মাত্র নয় টেস্ট খেলা এ বাঁ-হাতি অর্থোডক্স বোলার করে রেখেছিলেন এক বিশ্বরেকর্ড, যা টিকেছিল প্রায় ১২৯ বছর। তবে সেই রেকর্ড এবার নিজের করে নিলেন বাংলাদেশের বিস্ময় বালক মেহেদী হাসান মিরাজ। অভিষেকের পর টানা দুই টেস্টে ১৯টি উইকেট নিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন ১৮ বছর বয়সী এ তরুণ।

এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ১৮৮৭ সালে ঘরের মাঠ সিডনিতে প্রথম টেস্টে ১১ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় টেস্টে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ফেরিস। সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ঘরের মাঠে এ রেকর্ডটি ভাঙেন মিরাজ। তবে উইকেট নিয়েছেন ঠিক মিরাজের উল্টোভাবে। প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ১২টি উইকেট নিয়ে এ বিরল রেকর্ডটি গড়েন এ অফস্পিনার।

এদিন ইংলিশদের শেষ জুটিটি ভেঙে এ রেকর্ড গড়েন মিরাজ। স্টিভেন ফিনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে শুধু নিজের বিশ্বরেকর্ডের উল্লাসে ভাসেননি তিনি। প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে হারানোর উল্লাসে মাতেন এ নবীন।

এর আগে রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৬ রান তুলে ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানের বড় লক্ষ্যই দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু সে লক্ষ্যটা যেন খুব সহজ মনে হচ্ছিল দুই ইংলিশ ওপেনারের ব্যাটিংয়ে। উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে নেন শতরান। তবে এর পরেই আলোয় আসেন মিরাজ।

বেন ডাকেটকে সরাসরি বোল্ড আউট করে নিজের প্রথম উইকেট নেন মিরাজ। এরপর কুকের সঙ্গে জুটি বাঁধা গ্যারি ব্যালেন্সকে তামিম ইকবালের ক্যাচে পরিণত করে টাইগারদের আবার ম্যাচে আনেন তিনি। তবে একই ওভারে ইংলিশ শিবিরে সবচেয়ে বড় আঘাত এ নবীন। এ সফরে দারুণ সফল মঈন আলিকে খালি হাতে বিদায় করেন তিনি। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এ অফস্পিনার।

এরপর আরেক ওপেনার আলিস্টার কুককে বিদায় করেন তিনি। সিলি পয়েন্টে মুমিনুলের তালুবন্দী করে ঢাকা টেস্টে ১০ উইকেটের স্বাদ নেন মিরাজ। তবে ১০ উইকেট নিয়ে থেকে থাকেন নি তিনি। এরপর জনি বেয়ারস্টোকে শুভাগতর ক্যাচে পরিণত করে দুই ইনিংসেই পাঁচ উইকেট নেওয়ার গৌরব অর্জন করেন এ ১৮ বছর বয়সী তারকা।

চট্টগ্রাম টেস্টেই চিনিয়েছিলেন নিজের জাত। প্রথম ইনিংসেই তুলে নিয়েছেন ছয়টি উইকেট। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে পান একটি উইকেট। ওই টেস্টে সিনিয়র সতীর্থ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান জ্বলে ওঠায় দ্বিতীয় ইনিংসে পার্শ্ব নায়ক হয়েই থাকতে হয় তাকে। অভিষেকের পর দ্বিতীয় টেস্টেই ১০ উইকেট নেবার গৌরব অর্জন করেন তিনি। তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে এক টেস্টে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি।