সোনালী ব্যাংকের জরিমানা তদন্তে লন্ডনে প্রতিনিধি দল
প্রকাশ: ২০১৬-১১-০৫ ১৩:০৬:০৮
ব্রিটেনের ফাইনান্সিয়াল কন্ডাক্ট অথরিটি-এফসিএ কতৃক লন্ডনে সোনালী ব্যাংককে আর্থিক অনিয়মের দায়ে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানার বিষয়ে তদন্তে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল। মূলত মুদ্রাপাচার প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ায় সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখাকে সম্প্রতি ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা করে দেশটির আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফাইনান্সিয়াল কন্ডাক্ট অথরিটি-এফসিএ।
সম্ভাব্য মুদ্রা পাচার ঠেকাতে পদ্ধতি উন্নত করতে সোনালী ব্যাং ককে ২০১০ সালে সতর্ক করেছিল এফসিএ। কিন্তু চার বছরেও ব্যযবস্থার উন্নতি ঘটাতে ব্যের্থ হওয়ায় এই জরিমানা করা হয়েছে। এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে সোনালী ব্যাং কের কাছে তথ্যপ চেয়েছিল এফসিএ, কিন্তু সাত সপ্তাহেও সেই তথ্যয পায়নি কতৃপক্ষ। এফসিএর তদন্তে উঠে এসেছে, ওই গ্রাহকের বছরে আয় ২৮ হাজার পাউন্ড, অথচ তিনি গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন ২৫ হাজার পাউন্ড, যা সন্দেহজনক। কিন্তু সোনালী ব্যাং ক এর কোনো তদন্ত করেনি।
এফসিএর নির্দেশে গত ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সোনালী ব্যাং কে নতুন হিসাব খোলা। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সোনালী ব্যাং্ক ইউকের পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যলবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সমালোচনাও করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাং কের যাত্রা শুরু হলেও নানা অনিয়মের কারণে ১৯৯৯ সালে এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মানি এক্সচেঞ্জে সীমাবদ্ধ ছিল ব্যাং কের কার্যক্রম।
২০০১ সালে সোনালী ব্যাং ক ইউকে নামে নতুন করে যাত্রা শুরু হয়। ব্রিটেনে বর্তমানে সোনালি ব্যাংকের তিনটি শাখা আছে যার অবস্থান লন্ডন, বামিংহাম এবং ব্র্যাডফোর্ডে। ব্রিটেনের বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশি প্রবাসীদের সেবার উদ্দেশ্যে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়ে আসছে। যার ৫১ ভাগ মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের।
ব্রাডফোর্ডের শাখাটি খুব শীঘ্রই বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটি। ২৪ সপ্তাহের জন্য কোন নতুন গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করতে নিষিদ্ধ করা হয়। অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্মকর্তা স্টিভেন স্মিথ সোনালি ব্যাংকের ব্যাংকিং সম্পর্কিত যে কোন কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এই পুরো বিষয়টি তদন্তের লক্ষ্যে বাংলাদশ ব্যাংকের তদন্ত টিম লন্ডনে আসছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনায় দেশের ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বাস্তব চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। পাশাপাশি বহির্বিশ্বে ও দেশের আর্থিক খাত সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা ছড়াচ্ছে।