জাবিতে বিতর্কিত শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা
প্রকাশ: ২০১৬-১১-০৫ ১৬:৪৭:৪৮
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক বিতর্কিত শিক্ষককে প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচান শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। যাকে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে আটক করেছিল র্যাব।
সম্প্রতি সময়ে এক অফিস আদেশে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বিতর্কিত শিক্ষক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) জাবি প্লাটুনের দায়িত্ব দেন। তখন থেকেই শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। এমন একজন বিতর্কিত শিক্ষক কিভাবে বিএনসিসি’র দায়িত্ব পায় সেই প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০১১ সালে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ফিরোজ-উল-হাসানকে আটক করে র্যাব। পরবর্তীতে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে জাবি প্রশাসন। সে সময় নানা তদবির করে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। যদিও সে ঘটনাকে তিনি ভুল বুঝাবুঝি বলে দাবি করেন।
পরবর্তীতে ২০১২ সালে শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মারধরে নিহত হন ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ। সে ঘটনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেক শিক্ষক থাকার পরেও এমন একজন বিতর্কিত শিক্ষক কিভাবে দায়িত্ব পান সেই প্রশ্ন তুলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না শর্তে বিএনসিসি’র এক ক্যাডেট বলেন, এ রকম একজন বিতর্কিত শিক্ষক পেয়ে আমরাও বিব্রত। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভালো শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টি পুনবিবেচনার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, এ রকম আরো অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ রয়েছে। যারা পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের ব্যানারে রাজনীতিতে ক্ষমতাবান হয়ে উঠছেন। বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশাসন বরাবরই অযোগ্যদেরকে মূল্যায়ন করে যোগ্যদেরকে অবমূল্যায়ন করছে।
এছাড়া গত ২৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা ও গাঁজসহ লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্র হাসেম রেজাকে আটক করে প্রশাসন। এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি কমিটির প্রধান ফিরোজ-উল-হাসান।
হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, অভিযুক্তকে বাঁচানোর জন্য তদন্ত কমিটির প্রধান ফাঁকফোকড় খুঁজতেছেন। তাকে বাঁচানোর জন্য আশ্বাস্তও করা হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। গত এক মাস ধরে দু-একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা কথা বললেও এখনো তিনি জমা দেননি।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।