মোংলাকে আন্তর্জাতিক বন্দরে রূপান্তরিত করা সম্ভব: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২৪-১১-০৬ ১৮:১৯:০৫
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বন্ধু প্রতিম দেশ ভারত যদি তাদের বন্দর ব্যবহার করতে দেয় তাহলে নেপাল ও ভুটান সঙ্গে ট্রানজিট সুবিধা তৈরি করে মোংলা বন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক বন্দরে রূপান্তরিত করা সম্ভব।’
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় মোংলা বন্দরের নৌ-চ্যানেল ও জেটি পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা সাখাওয়াত এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ১০ টায় বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মোংলা বন্দরের সঙ্গে আমরা আখাউড়া ও সিলেটে দুটি স্থলবন্দর সচল করতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে চিনা কোম্পানির স ‘এল ও সি-৩ এর জি টু জি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়। যা শুরু থেকে আগামী দুই বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে। ফলে ‘মোংলা বন্দর হবে আন্তর্জাতিক বাজারে বিশ্বমানের নিরাপদ আধুনিক ও স্মার্ট সমুদ্রবন্দর।’
এ মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান। মোংলা বন্দরের কনফারেন্স রুমে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। আলোচনা সভায় বন্দরের ড্রেজিং কার্যক্রম, উন্নয়ন প্রকল্প, জাহাজ, কার্গো, কন্টেইনার, গাড়ি আমদানির বাৎসরিক হিসাব ও বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেয়া হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন), বিভাগীয় প্রধানরা, উপদেষ্টার সফরসঙ্গী এবং বন্দরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিং ও মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। আলোচনা সভার পরে মোংলা বন্দর পরিদর্শনের অংশ হিসেবে পশুর চ্যানেলের বিভিন্ন স্পট পরিদর্শন করেন। এছাড়াও ভিটিএমআইএস (মোংলা), ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট এরিয়া ও স্থায়ী বন্দর জেটি এলাকা ঘুরে দেখেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে কন্টেইনার টার্মিনাল ও ইয়ার্ডসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে এবং মানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ভারত, নেপাল ও ভুটানের জন্য এই বন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী হবে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা এসময় খুলনা ও যশোরের বন্ধ ৫টি পাটকল চালুর জন্য চায়না ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ইজারা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে সাংবাদিকদের জানান। এর আগে নৌ পরিবহন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বন্দরের ড্রেজিং ও উন্নয়ন প্রকল্প, জাহাজ, কন্টেইনার এবং গাড়ি আমদানির বাৎসরিক হিসাব নিয়ে মত বিনিময়সহ বন্দরের পশুর চ্যানেল ও জেটি এলাকা পরিদর্শন করেন।
এছাড়া এ বন্দরটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে মোংলা বন্দরটির সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে ও কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। তবে একটি কাজ দ্রুত করলে মোংলা বন্দরের সুযোগ সুবিধা কতটুকু তা প্রকাশ পাবে, তা হলো আন্তজার্তিকভাবে এ বন্দর নিয়ে প্রচারণা। বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীদের বন্দরের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে, আমদানি-রফতারিকারক ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানাতে হবে এ বন্দর ব্যবহার করার জন্য। তা হলেই মোংলা বন্দর হবে একটি বিশ্বমানের আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্র বন্দর।
বিএইচ