জাবিতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ও জাকসু নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আপডেট: ২০২৪-১১-১১ ১২:০৬:৩৩
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে— বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বশির আহমেদসহ গত ১৪, ১৫ ও ১৭ জুলাই সংঘটিত হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকল শিক্ষককে তদন্ত চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা। একইসাথে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য ও জুলাই গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও হলে পুনর্বাসনের বিরোধিতা করে প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়ামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ-জেইউ) এর শিক্ষার্থী ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা। তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অভিযুক্ত শিক্ষকরা এখনো ক্লাস পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নির্দ্বিধায় ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসন ঘটবে। যেহেতু কোনো নিয়ম মেনে গণঅভ্যুত্থান হয়নি, সেহেতু নিয়মের অজুহাতে এই দোসরদের পুনর্বাসন আমরা মেনে নেব না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত বলেন, “একজন খুনি কখনো শিক্ষক হতে পারে না। আওয়ামী লীগপন্থী অধ্যাপক বশির আহমেদ ও তার সহযোগীরা বিগত আন্দোলনগুলোর মতো এই আন্দোলনকেও দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমরা এই আন্দোলনকে সফল করেছি। যাদের হাতে শিক্ষার্থীদের রক্ত লেগে আছে, তারা প্রশাসনিক পদে থাকার মাধ্যমে শহিদদের প্রতি বেইমানি করছেন। অবিলম্বে তাদের এসব পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যাতে পুনর্বাসিত হতে না পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ প্রয়োজন। একইসঙ্গে, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে জাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।”
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের দফতরে উপস্থিত হন এবং তিন দফা দাবি পেশ করেন। এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, “উপাচার্য স্যার জানিয়েছেন, আমাদের দাবিগুলো সিন্ডিকেট সভায় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তবে, যদি আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক বশির আহমেদকে ডিন পদ থেকে অব্যাহতি না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা সিন্ডিকেট সদস্যদের অবরুদ্ধ করার কর্মসূচি ঘোষণা করবো।”
এনজে