নিজেকে কেবলই অনুভূতিশুণ্য মনে হয়!!
আপডেট: ২০১৬-১২-০৩ ১৮:১২:২৯
নিজেকে কেবলই অনুভূতিশুণ্য মনে হয়। একটার পর একটা হত্যাকান্ড ঘটেই চলছে। কোন কোন হত্যাকান্ডের কথা বলব? নাকি কথা বলব দেশ ও সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে। আমি কী প্রতিনিধিত্ব করি এই সমাজ ও দেশকে? নিজের মনেই ভাবছিলাম কোথায় যাচ্ছি আমরা, কী ভীষণ অস্থির এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। অধিক জনসংখ্যার দারিদ্র্য পীড়িত এই দেশে মানুষ লড়াই করে বেঁচে আছে। তারা প্রতিনিয়ত লড়াই করছে প্রকৃতি বিরুদ্ধে, ক্ষুধার বিরুদ্ধে। এই নীরিহ মানুষগুলো রাষ্ট্রের কাছে কী চায়? কোন কারণে এত নির্যাতন এত অন্যায়- অবিচার? এতো অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেও কেন দেশের মানুষ নির্বিকার থাকবে? কেন মেনে নেবে এতো অবিচার?
যেন কারো কিচ্ছু করার নেই, কিংবা কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নেই যে কি ঘটছে চারিদিকে। কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকেই যায়, কেন এমন হচ্ছে? এর কারণ কী? শুধু কি নাস্তিকমুক্ত দেশ চাই বলে একদল নরপিশাচ ক্ষেপেছে? শুধু কী পুরুষের আধিপত্য প্রমাণের জন্য যত্রতত্র নারীধর্ষণ ? শুধু কী ক্ষমতার দম্ভ প্রমাণের জন্য কারণে-অকারণে ভয়াবহ হারে বেড়েছে শিশু নির্যাতন? জাতি হিসেবে নানাকারণে আমরা শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার; বিশ্বের দরবারে আমরা আমাদের কৃতিত্ব নিয়ে বড়াই করি। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু এতকিছু গৌরব ঢাকা পড়ে যায় আমাদের নোংরামি, কদাকার, কুৎসিত চেহারার অন্তরালে। আমাদের ক্ষমতা দখলের যে রাজনীতি, আমাদের বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি, আইনের অপব্যবহার যেভাবে দিন দিন আমাদের সমাজটাকে গ্রাস করেছে তার হাত থেকে সহসা কোন মুক্তির পথ দেখছি না। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়গুলতে আদৌ চিন্তিত বলেও মনে হয় না। ক্ষমতার দলাদলি, রাজনৈতিক কূটচালে এভাবে একের পর এক তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে অকালে? বাদ বিতণ্ডার তোরে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাচ্ছে এত রক্তের দাগ। আর কত রক্তের দরকার? কত রক্তাক্ত হবে এই সোনার বাংলা? কে নেবে এই সকল হত্যার দায়?
এই সকল প্রশ্নের উত্তর আমার মাথায় আসে না। আমাদের কারো মাথায়ই আসেনা। আমরা খুব অসহায় বোধ করি, অস্থিরতায় কিংবা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি।এইসব সন্ত্রাসীরা, যারা ধর্মীয় অনুভূতির কারণে অভিজিৎ রায় হুমায়ুন আজাদ, অনন্ত বিজয়, রাজীব, দীপনকে মেরেছে ওরা একদিন আমাকেও আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু চাপাতির কোপে কতগুলো স্বর বন্ধ করবে ওরা? কেন এই বরবরতা? হিংস্রতা?
ব্লগারদের মতামত, মতাদর্শ বা লেখা নিয়ে আমার কিছু বলার নাই, কিন্তু বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও গনতন্ত্র আমার অনেক কিছু বলার আছে। বলার আছে সকল হত্যাকান্ড এবং হত্যাকান্ডের পরবর্তী তদন্ত ও বিচার নিয়ে। ব্যক্তি বিশেষে মতাদর্শ ভিন্ন হতেই পারে। মতাদর্শের ভিন্নতার কারনে মানুষকে হত্যা করা কি মানবাধিকারের লংঘন করা না? মানবাধিকার নিয়ে আমরা অনেক কথা বলি, কথা বলি গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে। কিন্তু প্রশাসন কতটা মানবাধিকার ও গনতন্ত্র রক্ষা করতে পারছে?
রাষ্ট্রের সকল স্তরে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে চাইলে সরকারকে বাক স্বাধিনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার সংরক্ষন করতে হবে।