ইনকেজশন দিলো ক্লিনিকের আয়া, শিশুর মৃত্যু
আপডেট: ২০১৫-১০-২৫ ১৯:২২:১১
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আয়ার দেয়া ইনজেকশনে (পুশ) সাজিদা নামের তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই শিশুর স্বজনরা ক্লিনিকে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। ক্লিনিকের ম্যানেজারসহ ৪ জনকে পিটুনি দিয়েছে।
নিহত শিশু সাজিদার মা শিউলী বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঠান্ডা জনিত কারণে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মোবারকের তিন মাস বয়সের শিশু কন্যা সাজিদাকে ফয়সল হসপিটালে (ক্লিনিক) ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক চন্দন কুমার সাহা তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থাপত্র দেন।
ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ১২ ঘণ্টা পর পর সিমিত মাত্রায় ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু শনিবার রাত ৮টায় ক্লিনিকের ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস আয়া শাহনাজকে দিয়ে শিশুটির দেহে মাত্রার কয়েকগুণ অতিরিক্ত ঔষধ ইনজেকশনের মাধ্যমে পুশ করে। এতে করে সাথে সাথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
শিউলী জানান, ক্লিনিকের আয়া শাহানাজ পুরো এক সিরিঞ্জ ঔষধ ইনজেকশনের মাধ্যমে তার শিশু মেয়ের শরীরে পুশ করার এক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুরে কোলে ঢলে পড়ে সে।
এদিকে শিশুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা ও স্থানীয় লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে ক্লিনিকের নার্সধারী আয়া শাহানাজ, নিপা, হ্যাপী, ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মচারী রুবেল, সেলিম ও মামুনকে ধরে গণপিটুনী দেয়। এসময় লোকজন হসপাতালটির জানালা ও চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে। বিক্ষুদ্ধ জনতা ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করে।
এক পর্যায়ে ক্লিনিকটি বন্ধ করে ম্যানেজার, ডাক্তারসহ অনেক কর্মচারী পালিয়ে যায়। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ বিক্ষুদ্ধ জনতাকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আয়া দিয়ে ইনজেকশন পুশ করার ব্যাপারে ফয়সল হসপিটালের ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, তারা (আয়ারা) এ হসপিটালে বিগত ৫ বছর ধরে কাজ করে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করায় তাদেরকে দিয়ে নার্সের কাজ করানো হয়।
এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সাখাওয়াত হোসেন জানান, কী কারণে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর এই ফয়সল হসপিটালে ভুয়া ডাক্তার ও নার্স দিয়ে মাছুমা (২৫) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায়ও জনতা হসপিটালে হামলা চালালে পরবর্তীতে মাছুমার পরিবারকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়ে আপোষের মাধ্যমে সমাধান করে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ