রুয়েটে লাঞ্ছনার অভিযোগে শিক্ষক অবরুদ্ধ
আপডেট: ২০১৭-০১-৩১ ১৩:৪১:৩৫
৩৩ ক্রেডিট পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) তৃতীয় দিনের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ লে. সেলিম হলের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করার সময় তাদের লাঞ্ছনা করা হয় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে ১২জন শিক্ষককে ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শিক্ষকদের হল থেকে বের করে নেয়া হয়।
রুয়েট সূত্রে জানা যায়, এদিন সকালে একই দাবিতে পূর্ব নির্ধারিত তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে বলে। এসময় শিক্ষকদের কথা অগ্রাহ্য করে তারা আন্দোলনে নামতে চাইলে শিক্ষকরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরা বাকবিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। শেখ হাসিনা হলের ছাত্রীরা এ আন্দোলনে যোগ দিতে আসলে তাদের ফিরিয়ে দিতে ১২-১৪ জন শিক্ষক হলের ভিতরে প্রবেশ করেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হলের গেটে অবস্থান নিলে শিক্ষকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের কারণে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এরপর দুপুরে উপাচার্যের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন শিক্ষক অবরুদ্ধ শিক্ষকদের বের করে নিতে আসলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তারা ব্যর্থ হয়। পরে বিকেল ৩টায় রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গিয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের বের করে নিয়ে আসেন। পরে বিকেল ৪টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপচার্যের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এসময় সেলিম হলের সামনে শিক্ষকরা আনসারদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের গায়ে হাত তুলে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিতে থাকে। এছাড়া শেখ হাসিনা হল থেকে ছাত্রীরা আমাদের আন্দোলনে যোগ দিতে আসলে তাদেরকেও লাঞ্ছনা করা হয়। এসময় তাদেরকে হলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে হল গেটে তালা লাগিয়ে দেয় শিক্ষকরা। এরপর আমরা এ হলের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করি।
এ বিষয়ে রুয়েটের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জালালউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে আন্দোলন করছে। তবে তাদের ওপর হাত দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। কোনো শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীর কাধে হাত রেখে বলে ক্লাসে যাও, আর সেটাকে যদি মারা বলা হয় তা দুঃখজনক।’
জালালউদ্দিন আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত হবে এখনো তা পরিষ্কার নয়। এটা প্রশাসনিক বিষয়। এ নিয়ে প্রশাসনে এখানো আলোচনা চলছে। আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে পরে সেটা জানানো হবে বলে জানান তিনি।
রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এন এইচ এম কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরে জানানো হবে।’
এ বিষয়ে জানতে রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল আলম বেগকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস