প্রাণের বইমেলার উদ্বোধন আজ
আপডেট: ২০১৭-০২-০১ ১৭:১৭:২২
আজ ১ ফেব্রুয়ারি। শুরু হয়েছে রক্তে রাঙানো ভাষার মাস। দিনের শুরু থেকেই প্রাণের মেলা শুরুর অপেক্ষায় আছে বাঙ্গালি জাতি। আজ বুধবার বেলা ৩টায় বাংলা একাডেমি চত্বরে উপস্থিত হয়ে এ গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ৪ দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৭’ এর উদ্বোধন এবং ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬’ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করবেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিদেশি অতিথি থাকবেন চীনের প্রখ্যাত গবেষক ও রবীন্দ্র অনুবাদক ডং ইউ চেন, অস্ট্রিয়ার মেনফ্রেড কোবো, পুয়ের্তোরিকোর লুস মারিয়া লোপেজ ও ভারতের চিন্ময় গুহ। এদের মধ্যে ডং ইউ চেন বাংলায় বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান জানান, গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মীর মশাররফ হোসেনের অমর সৃষ্টি ‘বিষাদ সিন্ধু’র অনুবাদ ‘ওসেন অব সরো’ এবং জার্মানি থেকে প্রকাশিত ‘হানড্রেড পোয়েমস ফ্রম বাংলাদেশ’ এর কপি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, বাংলা একাডেমির মূল চত্বর ও একাডেমি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৪ লাখ বর্গফুট জায়গায় গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। গ্রন্থমেলার জন্য উদ্যানকে ১২টি চত্বরে সাজানো হয়েছে। এবার একাডেমি চত্বরে ৮০টি প্রতিষ্ঠানকে ১১৪টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৪৯টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলা একাডেমিসহ ১৪টি প্রকাশনা সংস্থাকে মোট ৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১৫টি প্যাভিলিয়ন দেওয়া হয়েছে। একাডেমির প্যাভিলিয়ন রয়েছে ২টি। আর ১০০ লিটল ম্যাগাজিনকে বর্ধমান হাউসের দক্ষিণ পাশে লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শামসুজ্জামান খান বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিশু কর্ণারকে এবারও বেশ আকর্ষণীয় করে সাজানো হচ্ছে। শিশুদের এ চত্বরে প্রবেশের জন্য আলাদা গেট থাকবে। ৬০ ইউনিট নিয়ে গড়া পুরো চত্বরে নানা রঙের লাইট দিয়ে সাজানো হবে। মাসব্যাপী গ্রন্থমেলায় এবারও শুক্র ও শনিবার থাকবে ‘শিশু প্রহর’। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থমেলা চত্বরের পরিবেশ নান্দনিক ও মনমুগ্ধকর করতে ফোয়ারা এবং স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল ও আড্ডার জন্য উন্মুক্ত স্থান রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, ১ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজিত আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে ১৬টি অধিবেশন রয়েছে। এতে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, চীন, রাশিয়া, পুয়ের্তোরিকো, সুইডেন ও ভারতসহ ৭টি দেশের মোট ২৭ জন কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী-প্রাবন্ধিক অংশগ্রহণ করবেন। এ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দেশের ৬ জন লেখক-বুদ্ধিজীবীকে ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন লেখক সম্মাননা ২০১৭’ দেওয়া হবে। এ সম্মাননা পাচ্ছেন- জাতীয় অধ্যপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম, রবীন্দ্র-গবেষক আহমদ রফিক, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামন।
মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই ৩০ শতাংশ এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন, তাদের বই বিক্রি/প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে।
তিনি জানান, গ্রন্থমেলায় টিএসসি, দোয়েল চত্বর দিয়ে দুইটি মূল প্রবেশ পথ, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তিনটি পথ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বাহিরের ৮টি পথ থাকবে। এবারই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের সুবিধার্থে একটি নতুন সুপ্রশস্ত গেট নির্মাণ করা হয়েছে।
১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত গ্রন্থমেলা খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস