এরদোয়ানের তুরস্কে নিষিদ্ধ ডাচ রাষ্ট্রদূত
প্রকাশ: ২০১৭-০৩-১৪ ১৭:৫২:২২
নেদারল্যান্ডে তুর্কি মন্ত্রীদেরকে গণভোটের প্রচার সমাবেশ করতে না দেওয়ার জেরে ডাচ রাষ্ট্রদূতকে নিষিদ্ধ করেছে তুরস্ক। এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসীদের সমর্থন’ দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান।
তুর্কি উপ-প্রধানমন্ত্রী নুমান কারতুমুলাস বলেছেন, ডাচ রাষ্ট্রদূতকে আঙ্কারায় ফিরতে দেওয়া হবে না। সম্প্রতি ছুটি কাটাতে তুরস্কের বাইরে রয়েছেন ডাচ রাষ্ট্রদূত কিজ কর্নেইলস ভ্যান রিজ। আঙ্কারায় তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি নেদারল্যান্ডের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের রাজনৈতিক আলোচনা বন্ধ করা এমনকি দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বেরও ইতি টানা হবে জানিয়েছেন কারতুমুলাস। নেদারল্যান্ড তাদের অবস্থান না বদলানো পর্যন্ত এ সমস্ত পদক্ষেপ কার্যকর থাকবে বলে জানান তিনি।
এর আগে শনিবার নেদারল্যান্ডসের রটেরডাম শহরে পুলিশ তুরস্কের দুই মন্ত্রীকে প্রচার সমাবেশ করতে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আঙ্কারা এর কঠোর পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দেয়। তুরস্কের মন্ত্রীরা রটেরডামে তুর্কিদের উদ্দেশে এ গণভোটেরই প্রচার চালাতে গেলে তাতে বাধা দেয় নেদারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। এক তুর্কি মন্ত্রীকে কনস্যুলেটে ঢুকতে না দেওয়া এবং পরে তাকে জার্মান সীমান্ত দিয়ে বের করে দেওয়া হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
এরই মধ্যে এরদোয়ান ডাচদেরকে নাৎসির অবশিষ্টাংশ এবং ফ্যাসিস্ট বলে মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ন্যাটো জোটের দুই মিত্র দেশের মধ্যে নজিরবিহীন কূটনৈতিক বিরোধ দেখা দেয়। ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুরস্কে বসবাসরত নাগরিকদের জন্য নতুন একটি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছেন। নেদারল্যান্ডের পদক্ষেপের জবাবে আঙ্কারার ডাচ দূতাবাস এবং ইস্তাম্বুলের ডাচ কনস্যুলেট এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে তুরস্কের হুমকির মুখে নেদারল্যান্ডস নত হবে না বলে জানিয়েছেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে সোমবার জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসীদের সমর্থন’ দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন এরদোয়ান। একটি তুর্কি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এই অভিযোগ তোলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তবে ওই অভিযোগকে ‘স্পষ্টভাবে অযৌক্তিক’ বলে তা নাকচ করে দিয়েছেন মার্কেল। তার মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ‘উস্কানির এই খেলায় অংশ নেয়ার কোনো ইচ্ছে নেই চ্যান্সেলরের।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ক্ষমতা আরও বাড়াতে ১৬ এপ্রিলে সংবিধান সংশোধন নিয়ে গণভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তুরস্কে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গণভোটকে সামনে রেখে ইউরোপের কয়েকটি দেশে বসবাসরত তুর্কিদের নিয়ে দেশটির নেতাদের সমাবেশ বাতিলের পর ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকারগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত যাচ্ছে এরদোয়ান সরকারের। তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী নুমান কুর্তুলমাস জানিয়েছেন, ইউরোপে শরণার্থী প্রবাহ ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তুরস্কের চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে পারে তার দেশ। তিনি বলেন, ‘আমরা ঠিক তাই করছি, যা তারা আমাদের প্রতি করেছে।’
আল জাজিরা ও বিবিসি