‘শেখ হাসিনাকে বাংলার মা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়’

আপডেট: ২০১৭-০৩-২৮ ১০:১৭:৩১


 

1(2)মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭ উৎযাপন উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি)- তে বিস্তারিত অনুষ্ঠানমালা অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ মার্চ ২০১৭ তারিখ রবিবার মহান শহীদদের স্মরণে চির উন্নত মম্ শির বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম এবং পরে একে একে ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমান, অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, হলের প্রভোস্টগণ, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরাও বিজয় স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে গাহি সাম্যের গান মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাককানইবি’র  উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম -এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এম.পি। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার সময়ে মাত্র ২৭ বছর বয়সেই বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করাই হলো পশ্চিম পাকিস্তানের মূল লক্ষ্য। তাই তিনি বলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান নয় পূর্ব বঙ্গ বা বাংলাদেশ। তাঁর এই লক্ষ্যকে অর্জনের জন্য ১৯৪৮ সালে ছাত্র লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ আজ স্বাধীন।’ প্রধান অতিথি আরও বলেন, দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ২০৪১ নয় ২০৩১ সাল পর্যন্তই যথেষ্ট। দেশের গ্রাম বাংলা তথা দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাতে শেখ হাসিনাকে বাংলার মা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘স্বাধীন দেশ আমরা এমনিতে পাই নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এবং দেশের অধিকাংশ লোকের আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা আজ দেশে পরিপুষ্ট হচ্ছে। দেশের সবজায়গায় যেন এক জাগরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। একসময় আমাদের দেশের ৭ কোটি মানুষ ঠিকমতো খাবার পেত না, অথচ এখন প্রায় ১৭ কোটি মানুষ তবুও বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। এর মূলে রয়েছে মানবসম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা।’ সভাপতি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে এখন আমাদের বাতাসের জায়গা দখল করতে হবে। একজনের হাতে অনেক মোবাইল থাকতে হবে এমন নয়, মোবাইলের বিভিন্ন এ্যাপস কীভাবে কাজ করে তা জানতে হবে এবং আমাদের তা তৈরি করতে হবে। জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে প্রযুক্তির চাবি আমাদের হাতে নিতে হবে। দেশের এতো উন্নয়নের মাঝে জঙ্গিবাদ এক বিষফোঁড়ার মতো। তবে এই জঙ্গিবাদ এখানেই শেষ হয়ে যাবে।’

বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন যথাক্রমে জাককানইবির ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমান এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম। ট্রেজারার বলেন, ‘এবার ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হলো। আশা করি আগামী বছর হতে বিশ্ব গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হবে।’

আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন যথাক্রমে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর এবং কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. মাহবুবুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস- ২০১৭ উদ্যাপন কমিটি’র সদস্য-সচিব সোহেল রানা। শিক্ষার্থীদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ছাব্বির আহমেদ এবং আপেল মাহমুদ। অনুষ্ঠানে ছয়জন বীরাঙ্গনাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। বীরাঙ্গনা মোছা. হাফিজা বেওয়া, সমলা বেওয়া, মোছা. জোবেদা বেওয়া, মোছা. জোবেদা বেওয়া, হাসেনা বানু এবং আসিরন বেওয়া (আম্বিয়া)’কে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। ছয়জন বীরাঙ্গনার প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সবশেষে সঙ্গীত বিভাগের পরিবেশনায় গান এবং থিয়েটার এ- পারফরম্যান্স স্টাডিজ(টিপিএস) বিভাগের পরিবেশনায় নাটক মঞ্চস্থ হয়।

এদিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দোলন চাঁপা হলের আয়োজনে ক্যারাম এবং ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং সভাপতি। এসময় দোলন চাঁপা হলের প্রভোস্ট আলফারুন্নাহার রুমা এবং হাউজ টিউটর ইসমতআরা ভূঁইয়া ইলা উপস্থিত ছিলেন।