আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রয়োজন ‘দশ গুণ’
প্রকাশ: ২০১৭-০৪-০২ ১০:০৩:১১
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীর দশ ধরনের গুণাবলি যাচাই করবে আওয়ামী লীগ। ২০১৯ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে প্রার্থীদের এ গুণাবলি যাচাই করবে দলের হাইকমান্ড। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক সদস্য জানান, ব্যক্তিগত ইমেজ, জনপ্রিয়তা, দলের প্রতি ত্যাগ, আনুগত্য, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক, দুর্নীতি, সাংগঠনিক রিপোর্ট, কর্মসূচিতে সক্রিয়, সরকারি-বেসরকারি ও দলীয় জরিপের সময় এসব মাপকাঠিতে প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করা হবে।
দলের নেতারা জানান, ২০তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পর সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলায় জেলায় সফর করছেন। এসময় স্থানীয় জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বর্তমান এমপিদের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাও তাদের (সংসদ সদস্য) বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে।
বর্তমান এমপিদের পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থীদের অবস্থান সম্পর্কেও তথ্য নেয়া হচ্ছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সর্বশেষ সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে আরও জনসম্পৃক্ত হতে এবং দলীয় ঐক্য অটুট রাখতে বলেন। পাশাপাশি সরকার যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে, তা মানুষকে অবহিত করার কথাও জানান। জনসম্পৃক্ততা না থাকলে আগামীতে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে সে সময় জানান প্রধানমন্ত্রী।
পরে এ বিষয়ে এমপিদের সতর্ক করে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, অনেক ভুল আছে যা সংশোধন করতে হবে। অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। নেতাদের বলব ভুল সংশোধন করুন, জনগণের কাছে যান। যারা জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য তাদের মনোয়ন দেয়া হবে না।
দলের নেতারা জানান, বর্তমানে প্রায় ৬০-৭০ জন দলীয় এমপি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে দল এবং দলের বাইরে বিতর্কিত। বেশকিছু এমপির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও রয়েছে। বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। যেসব এমপি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন না দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন হাইকমান্ড। সেক্ষেত্রে বিকল্প প্রার্থী খোঁজার কাজও চলছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, আগামী নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার মাধ্যমেই বিজয়ের প্রাথমিক কাজ সূচিত হবে। সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খোঁজা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে বড় উদাহরণ হিসেবে কাজ করছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, যোগ্য প্রার্থী হলে জনগণ যে গ্রহণ করবেই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তার প্রমাণ। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই আওয়ামী লীগ জনপ্রিয় প্রার্থীদের বেশি মনোনয়ন দেবে। ইতোমধ্যে সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে চাই। নির্বাচনে সৎ, যোগ্য, কর্মীবান্ধব, দুর্নীতিমুক্তদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হবে।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, জনসম্পৃক্ততা আছে, দল ও জনগণের প্রতি কমিটমেন্ট আছে, দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অবস্থান ভালো- এমন লোককে মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ।
দলটির উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্লিন ইমেজ, দলের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পাশে থেকেছেন, আনুগত্য- এসব বিবেচনায় নেয়া হবে। পাশাপাশি সাংগঠনিক সম্পাদকের রিপোর্ট, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জরিপও গুরুত্ব দেয়া হবে। সূত্র: জাগো নিউজ
সানবিডি/ঢাকা/জেএইচ/এসএস