রাকিব হত্যায় ফাঁসির সাজা কমে যাবজ্জীবন

প্রকাশ: ২০১৭-০৪-০৪ ১২:৫৮:১১


Rakibখুলনার আলোচিত শিশু রাকিব হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, খুলনার টুটপাড়া কবরখানার পাশে শরীফ মোটরসের মালিক শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টু।

এর আগে, গত ২৯ মার্চ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুর হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম মো. চৌধুরী আলাল।

গত ১০ জানুয়ারি এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়। এ মামলার সর্বমোট ১১ কার্যদিবসে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

শুনানির শেষ দিনে আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল আসামিদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে আদালতে বলেন, শিশু রাকিবকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়নি; বরং এটি ছিল দুষ্টুমির ছলে একটি দুর্ঘটনা। আর এ বিষয়ে চাক্ষুস কোনো সাক্ষীও নেই।

এ সময় আদালত বলেন, আসামিরা দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত রাকিবের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রয়েছে।

বক্তব্য শেষে আদালত ৪ এপ্রিল রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করেন। এর আগে গত ১০ জানুয়ারি এ মামলার পেপারবুক পাঠের মধ্য দিয়ে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট খুলনার টুটপাড়া কবরখানার পাশে শরীফ মোটরসে মোটরসাইকেলের হাওয়া দেওয়ার কমপ্রেসর মেশিন দিয়ে শিশু রাকিবের পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ওই গ্যারেজের মালিক মো. শরীফ, তার সহযোগী মিন্টু ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। ঘটনার পরদিন তিনজনের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা হয়। অভিযুক্ত তিনজনই ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরপরই দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের চার মাসের মধ্যেই খুলনার দায়রা আদালত ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর আসামি শরীফসহ দুইজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরে মৃতুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। সে সময় মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে পাঠানো হয়।