মা আমায় ক্ষমা করো
আপডেট: ২০১৭-০৫-১৫ ১২:১২:১৫
আজ মা দিবস। সবাই ফেসবুকে সোচ্চার, মাকে নিয়ে কিছু না কিছু লিখছে সবাই। মা আমরা তোমাকে অনেক ভালবাসী। হেনো, তেনো ইত্যাদি। আমরা মা কিংবা বাবা দিবস এলেই আমাদের ভালবাসা জাহির করি। আমরা কি ফ্যাশনাবল হয়ে গেছি সোসাল মিডিয়ায়। যে দিবস এলেই ভালবাসা দেখাই। ভালবাসা দেখানো বিষয় না, ভালবাসার বিষয়।
মা সন্তানের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেন। মায়ের মত এরকম ত্যাগ কেউই স্বীকার করতে পারে না। ছোট বেলায় যে পরিচর্যার মধ্যে মা আমাদের বড় করেন, সেখানে যদি একটু অবহেলা থাকতো তাহলে আজ আমাদের অস্তিত্ব থাকতো না। মায়ের পরম ভালবাসায় আজ আমরা আমাদের স্বস্থানে।
লেখা-পড়া, শিষ্টাচার, নম্রতা-ভদ্রতা শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মা। মা ছোট বেলায় বলতেন বাবা কারো সাথে ঝগড়া করবে না, কাউকে জ্বালাবে (কষ্ট দেবে না) না, কেউ কিছু খেলে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবে না। বড়দের সম্মান করবে, তারা কিছু বললে শুনবে। মিথ্যে বলবে না, কারো কিছূ ধরবে না ইত্যাদি। মা এইভাবে আমাদের সব ভাই-বোনকে মানুষ করেছেন। নৈতিক শিক্ষার এক অপূর্ব সমন্বয়ের মাধ্যমে।
পৃথিবীর সব মায়েরাই তার সন্তানকে তার নিজের থেকেও বেশি ভালবাসেন। মা-ই একমাত্র ব্যক্তি যে কোন রকম স্বার্থ ছাড়াই ভালবাসেন। আমাদের কাছে অনেক উদারহন আছে, মা নিজের সন্তানের জন্য জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে দিয়েছেন। মায়ের নাড়ী ছেড়া ধন হল তার সন্তান। এই নাড়ীর টান অকল্পনীয়।
লেখা পড়া শিখে সন্তান যখন এই মাকে ছেড়ে দূরে থাকে, তখন মা অনেক কষ্টে সন্তানের পানে চেয়ে থাকে। আমরা তো এখন আধুনিক যুগের মানুষ, আধুনিকতার ছোয়ায় মাকে দূরে রাখি। অনেকে আবার স্ত্রীর কারণে মাকে গাল মন্দ করে, দূরে রাখে। আমি মনে করি ভাল কোন স্ত্রী তার শাশুড়ীর সাথে খারাপ আচারন করতে পারে না। তাদের মধ্যে সর্ম্পক থাকবে মা-মেয়ের মত। ছেলের বৌ মায়ের কাছে মেয়ের মত। এই বৌকেও শাশুড়ী অনেক ভালবাসেন। আর সেই মাকে আমরা বিদ্ধাশ্রমে রাখি।
মা-বাবা বিদ্ধাশ্রমে অনেক কষ্টে দিন যাপন করেন, আমরা অর্থের পিছনে ছুটতে গিয়ে দেশের বাইরে থাকি। অনেক সন্তান আছে যারা বাবা-মার খবরই রাখে না। মা-বাবা চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেন, আর ভাবেন আজ আমাদের এই নি:সঙ্গ সময়ে কেউ আমাদের পাশে নেই।
এই কথা মনে হলে, খুবই খারাপ লাগে। তখন বলতে ইচ্ছে হয়, কেন এই সন্তানদের পড়া-শুনা করিয়েছিলেন মা-বাবা। পড়া-শুনা করে সন্তান দেশের বাইরে থাকে, আর মা-বাবা বাড়িতে পরে পরে কাঁদে। টাকা-পয়সা দিয়ে কিছু হয় না, মায়ের ভালবাসার সাথে পৃথিবীর কোন সম্পদের তুলনা হয় না।
আজকে এই দিনে শপথ করি সব সময় মা-বাবার পাশে থাকবো। যেভাবে মা ছোট বেলায় আমার কচি হাত ধরে হাটতে শিখেছিলেন। সেই মা-বাবর জন্য জীবন উৎসর্গ করবো, এই জীবনের কি মূল্য আছে, যদি না মা-বাবার জন্য কিছু করতেই না পারি।
যে সকল সন্তান তার মাকে ভুলে দূরে, তারা আজ মাকে কাছে টেনে নেই ভালবাসী। মা তার প্রিয় সন্তানটির পথে পানে তাকিয়ে, এই বুঝি এলে মোর বাবু- সোনামনি।
মায়ের সাথে অন্যায় করলে ক্ষমা করার জন্য মা অপেক্ষা করছে। মা সব সময় চেয়ে থাকে এই বুঝি মোর খোকা-খুকি এসে বললো মা আমায় ক্ষমা করো।
সাংবাদিক ও লেখক
সানবিডি/ঢাকা/এসএস