তিন বছরের জন্য ১৫ শতাংশ হারেই ভ্যাট

প্রকাশ: ২০১৭-০৬-০১ ১৮:৩০:১২


Bugget1হাজারের বেশি পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দিয়ে ১৫ শতাংশ হারেই কার্যকর হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক)ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২। যা আগামী তিন বছর অপরিবর্তিত থাকবে। আর নতুন এ আইন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করে অর্থমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আমার কাছে শুরু থেকে একটি অতি উত্তম কর বলে মনে হয়। তবে করের আওতায় কোনো পণ্য উৎপাদনে বা সেবা প্রদানে বিভিন্ন পর্যায়ে যে হিসাব রাখতে হয় তা সংগ্রহকারী কতিপয় ব্যবসায়ীরা রাখতে চান না। তাই ভ্যাটকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আমাকে বিভিন্ন উপায় উদ্ভাবন করতে হয়। তাই টার্নওভার কর ও ভ্যাটমুক্ত সীমা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট রাখার প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে ছোট বড় সব ধরনের ব্যবসা ও সেবার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা বলা হয়েছে। তবে বার্ষিক টার্নওভার বছরে ৩৬ লাখ টাকার নিচে হলে ব্যবসায়ীকে ভ্যাট দিতে হবে না। মাসে ৩ লাখ টাকা পর্য্ন্ত টার্নওভারধারী প্রতিষ্ঠানের কোনো করই দিতে হবে না।

একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী টার্নওভার করের সীমা ৮০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থ্যাৎ যে সব প্রতিষ্ঠানের মাসিক টার্নওভারের পরিমাণ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচে তারা মাত্র ৪ শতাংশ হারে টার্নওভার কর পরিশোধ করবেন।

এতদিন ৩০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক টার্নওভারের ক্ষেত্রে তিন শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নেই। এছাড়া, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রস্তাব অনুসারে নতুন ভ্যাট আইন ও বিধিমালার পদ্ধতিগত সহজীকরণ সংক্রান্ত কতিপয়  সংশোধন আনা হয়েছে।’

২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৬৮ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

আয়কর ও মুনাফার ওপর কর থেকে ৮৫ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। বিদায়ী বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।

এছাড়া নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক থেকে ৩০ হাজার ২৩ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৩৮ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৪৪ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী।

বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা, আদায় সন্তোষজনক না হওয়ায় তা সংশোধন করে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। সংশোধন করে তা ৩ লাখ ১৭ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা করা হয়েছে।