ঘরের সাজে ঈদের আমেজ
আপডেট: ২০১৭-০৬-২৪ ০৯:৫৩:৪৬
দেখতে দেখতে ঈদ চলে এলো। ঈদে শুধু নতুন জামাকাপড় কিংবা খাওয়াদাওয়াই নয়; অনেকেই চায় ঘরের সাজে কিছুটা পরিবর্তন আনতে। এ পরিবর্তন যে দামি দামি আসবাবপত্র কেনাকাটা করে করতে হবে এমন নয়। সাধ্যের মধ্যে সম্ভব আর টুকটাক জিনিসপত্র এদিক সেদিক করে ঘরে আনা যায় ঈদের আমেজ।
উৎসবের আমেজ ধরে রাখতে ঘরের আসবাবপত্রের ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন করতে পারেন। যেমন—ডাইনিং টেবিলের কভার, বসার ঘরের কুশন কভার, সোফার কভার, দরজা-জানালার পর্দা, বিছানার চাদর, ফুলদানি ইত্যাদি। আপনার রুচি, পছন্দ আর ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী ঘরের পর্দাগুলো পাল্টে দেখুন, বদলে যাবে অন্দরের চেহারা। অন্দর মহলের পর্দা পরিবর্তনে খেয়াল রাখুন সময়, রং আর কাপড়ের দিকে। এবারের ঈদ আসছে ভ্যাপসা গরম আর এই রোদ এই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। সেজন্য পর্দায় রাখুন সুতি কাপড়ের হালকা রং। এতে করে আপনার চোখের স্বস্তি, শান্তি ও শীতলতা সব বজায় থাকবে।
বৈঠকখানা একটু সময় নিয়ে ভেবে সাজান। কারণ মেহমানরা এখানেই বসবেন। এখানে চমক আনতে বদলে ফেলুন কুশন কভার, পরিবর্তন করতে পারেন সোফার কভারেরও। এক্ষেত্রেও সুতি কাপড়ের হালকা রং মানিয়ে যাবে আপনার ঘরের সাজসজ্জায়। দেয়ালে টাঙান প্রাকৃতিক কোনো ছবি, পছন্দসই ওয়ালমেট, কারুকাজ করা কোনো নকশীকাঁথা অথবা এরকম কোনো ভাস্কর্য। তবে খেয়াল রাখবেন যা-ই করেন না কেন সেটা যেন আপনার রুচি আর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই হয়। ঘরের সজীবতা বজায় রাখতে রাখুন ডিভান, পছন্দসই বিভিন্ন ল্যাম্পশেড, সতেজ ফুলসহ বড় কোনো ফুলের টব। প্রাণ ভরে স্বস্তির শ্বাস নিবেন আর মনের আনন্দে হয়তো দু’লাইন গেয়েও উঠবেন নিজের অজান্তেই।
সম্ভব হলে কিছু শোপিস কিনে নিন। না হলে পুরোনোগুলোই পরিষ্কার করে জায়গা বদল করে রাখুন। ছোটখাটো এরকম রঙিন শতরঞ্জী, সুন্দর কোনো ল্যাম্পশেড বা আকর্ষণীয় কয়েকটি শোপিস আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিবে বহুগুণ।
বাঙালির চিরচেনা খাবার ঘরটি খুব ছিমছাম অথচ পরিপাটিভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখুন এ দিনে। ঘরে কোনো বাড়তি জিনিসপত্র না রেখে ডাইনিং রুমের একপাশে ডিনার ওয়াগনে সব থালাবাসন, চামচসহ খাবার সরঞ্জামাদি গুছিয়ে রাখুন। এতে ব্যস্ততম এদিনে যেকোনো সময় অতিথি এলে সেগুলো খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। ঘরের জায়গা অনুযায়ী খাবার টেবিলের পাশে রাখতে পারেন সুন্দর কোনো ফুলদানি আর তাতে রাখুন সজীব ফুল। যা ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি আপনার মনকে করে তুলবে ফুরফুরে।
শোবার ঘরের সাজসজ্জা পুরোপুরি নিজের মতো সাজান। কারণ এটা আপনার একান্তই নিজের কামরা। এখানে সাজাতে খেয়াল রাখুন ঘরের সৌন্দর্য বাড়ার পাশাপাশি আপনার শরীর-মন দুটোই যেন স্বস্তি আর আরাম পায়। সেজন্য আপনি বেছে নিতে পারেন সুতি কাপড়ে কারুকাজ করা বিছানার চাদর। ফলে ঘরে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি আপনার শরীর মন উভয়ই স্বস্তি, শান্তি আর আরাম পাবে। শোবার ঘরের খাটের পাশে বেডস্ট্যান্ডে রাখতে পারেন সিরামিকের থালার ওপর ক্রিস্টালের ফুলদানির সঙ্গে ফ্লোটিং ক্যান্ডেল।
যাদের নতুন করে ঘর সাজানোর মতো বাজেট নেই, তারাও একটু খেয়াল করে খুব সুন্দরভাবে সাজাতে গোছাতে পারেন আপনার প্রিয় আবাসনটি। এক্ষেত্রে বৈঠকখানার সোফার কভার ধুয়ে ফেলুন। সেটা সম্ভব না হলে সোফার গদি বা কর্নারগুলো ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। মেঝের কার্পেট সরিয়ে রুমে থাকা ধুলোবালি পরিষ্কার করে নিন। সম্ভব হলে কার্পেটটি রোদে শুকিয়ে নিন। কুশন কভার, পর্দা, বিছানার চাদরসহ সব আসবাবপত্র খুব সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে ঝকঝকে করে ফেলুন। ঘরের এক পাশে দাঁড়িয়ে চারদিক ভালোভাবে তাকিয়ে দেখুন আসবাবপত্র একটু এদিকে ওদিকে সরিয়ে বা রিঅ্যারেঞ্জ করতে পারেন কি না। কিছুটা নতুনত্বভাব ফিরে আসবে।
তো পর্যাপ্ত সময় হাতে আছে। আপনার সাধ আর সামর্থ্য অনুযায়ী সাজিয়ে গুছিয়ে নিন আপনার প্রিয় অন্দরমহল ঠিক আপনারই মতো করে।