চীন-পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে যুদ্ধে প্রস্তুত ভারত
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-০৮ ১১:৪৩:৫৬
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে একযোগে যুদ্ধের জন্য ভারত প্রস্তুত বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেন, একদিকে সীমান্ত এলাকায় বেইজিং পেশিশক্তি দেখাচ্ছে, অন্যদিকে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সঙ্গে সমঝোতা করে চলারও কোনো সম্ভাবনা নেই। বুধবার নয়াদিল্লিতে সেন্টার ফর ল্যান্ড ওয়ারফেয়ার স্ট্যাডিস আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। খবর এএফপি ও এপির।
চীন-ভারত-ভুটান সীমান্তের ডোকলাম উপত্যকা নিয়ে ৭৩ দিন ধরে চলা সংঘাত গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে।
সেই প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান আশঙ্কা করে বলেন, ‘ভারতের উত্তর সীমান্তে এই পরিস্থিতি ক্রমে ভবিষ্যতে আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যেখানে এই ছোট সংঘাত ক্রমশ জমে বড় যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, পশ্চিম দিকের সীমান্ত দিয়ে এ সংঘাতকে পুঁজি করে সুযোগ কাজে লাগাতে পারে পাকিস্তান।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ লড়াই স্থান ও কাল বিশেষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতেও পারে। আবার গোটা সীমান্তজুড়েও যুদ্ধ বাধতে পারে।’
১৯৬২ সালে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় ভারত। এছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের তিনবার যুদ্ধ হয়েছে, এর মধ্যে দুবারই ছিল কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে। এ তিন দেশই পরমাণু অস্ত্রে শক্তিশালী।
রাওয়াত বলেন, ‘যুদ্ধের সম্ভাবনার জন্য আমাদের তৈরি থাকা উচিত। পরমাণু অস্ত্র যুদ্ধ প্রতিহতের অস্ত্র। কিন্তু এগুলো যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে না বা কোনো জাতিকে যুদ্ধের জন্যও অনুমোদন দিতে পারে না। এজন্য বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে এই দ্বিমুখী যুদ্ধে জিততে হলে সামরিক বাহিনীর তিন বিভাগকেই চরম শক্তিশালী হতে হবে।’
চীনে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের মাত্র দু’দিনের মাথায় এ মন্তব্য করলেন রাওয়াত। মঙ্গলবার ভারত-চীন সম্পর্কে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে ঐকমত্যে পৌঁছান মোদি ও জিনপিং। কিন্তু ভারতীয় সেনাপ্রধান স্মরণ করিয়ে দেন, চীনকে হাল্কা নেয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।
তার দাবি, ‘সীমান্তের উত্তর দিকের প্রতিপক্ষ এরই মধ্যে নিজেদের পেশিশক্তি দেখাতে শুরু করেছে। এক এক করে এলাকা দখল করছে। আমাদের সহ্য ক্ষমতা পরীক্ষা করছে। ফলে আমাদের যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। কারণ, যা পরিস্থিতি তা অচিরেই যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।’
পাকিস্তান প্রসঙ্গে রাওয়াত বলেন, ‘তাদের সঙ্গে সমঝোতা করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ মনে করে, ভারত তাদের দেশকে ভেঙে টুকরা টুকরা করতে চাইছে।’
চীনের ক্ষোভ : ভারতের সেনাপ্রধানের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। বুধবার চীনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন, সীমান্তের সব বিতর্কিত এলাকা ধীরে ধীরে চীন দখল করে নিতে চাইছে। তার জেরে চীন-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একযোগে লড়তে হতে পারে ভারতকে।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার চীনা সরকারের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন, ‘ঠিক দু’দিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছিলেন, দুই দেশ হল পরস্পরের জন্য উন্নয়নের সুযোগ, পরস্পরের জন্য বিপজ্জনক নয়।’