রোহিঙ্গা সংকট দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: কাদের
প্রকাশ: ২০১৭-০৯-১৫ ১১:৩১:৩৯
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান হত্যা-নির্যাতনের কারণে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট এ মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা খুব সতর্কতার সঙ্গে মোকাবেলা করছে সরকার।
শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা বলেছেন বলে জানান মন্ত্রী।
গত ২৫ আগস্ট ভোররাতে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সীমান্ত পুলিশের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘর্ষ হয়।
এর জের ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে। ফলে ব্যাপকসংখ্যক রোহিঙ্গা হত্যা-ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়।
জাতিসংঘ বলছে, এ অভিযানকালে তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে এবং প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় চার লাখ মানুষ।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পুরুষদের ধরে নিয়ে হত্যা করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে আর মুসলিম-অধ্যুষিত গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
গত মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দেখতে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সাত-আট লাখ যতই হোক আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার মানসিকতা আমাদের আছে। থাকা-খাওয়াসহ সব ধরনের সহযোগিতার ব্যবস্থা করবে সরকার।
এ সময় মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অন্য দেশের নাগরিকদের দীর্ঘদিন আশ্রয় দিতে পারব না। চূড়ান্তভাবে মিয়ানমারকে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। এজন্য জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা দিয়েছিলেন রোহিঙ্গারা তাদেরই নাগরিক। এখন তারা তাদের নাগরিক হিসেবে অস্বীকার করছেন। বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে তাদের দেশছাড়া করেছে। মানবিক কারণে প্রতিবেশী হিসেবে আমরা নির্যাতিতদের আশ্রয় দিয়েছি। কারণ ঘর পোড়ানোর যন্ত্রণা আমি অনুধাবন করতে পারি। ১৯৭১ সালে আমাদের ওপরও এ রকম বর্বরতা চলেছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নেতাদের বলব তারা যেন মিয়ানমারকে বাধ্য করে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে। একটা দেশের নাগরিকদের ওপর এভাবে নির্যাতন কখনো কাম্য নয়।