ছয় মাসের মধ্যে দৃশ্যমান হবে মেট্রোরেল: সেতুমন্ত্রী
প্রকাশ: ২০১৭-১০-১১ ২০:২৫:৩২
আগামী ছয় মাসের মধ্যে সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প মেট্রোরেল দৃশ্যমান হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার দুপুরে উত্তরা মেটোরেলের কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীতে দ্রুত ও কম খরচে নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের নির্মাণ কাজে সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’
এ সময় রাজনৈতিক প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জামায়াতের হরতাল সহিংস রূপ নিলে তখন জবাব হবে সেরকম। উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।’ প্রসঙ্গত, দলের আমির, নায়েবে আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। ফখরুল প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনারে কাঁদতে বলেন। হতাশ হয়ে চোখের জল ফেলছেন।’ এ ছাড়া বিচারপতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনিতো মেরুদণ্ডহীন না। জোর করে বিদেশ পাঠানো হলে উনি নিজেই বলতেন।’
ঢাকা মহানগরীতে দ্রুত ও কম খরচে নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার ২০১২ সালে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল পথে মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ২০১৯ সালে ও মতিঝিল পর্যন্ত ২০২২ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় মেট্রোরেল বাস্তবায়নে ‘ঢাকা ম্যাস র্যা পিড ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ অনুমোদন করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। এর মেয়াদকাল ধরা হয় ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য বা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ঋণ হচ্ছে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ও সরকারের অর্থায়ন ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। জাইকার ঋণের মেয়াদ হচ্ছে ৪০ বছর এবং গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তিও হয় ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি।
প্রকল্পের আওতায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রাস্তার মাঝ দিয়ে মোট ২৪ জোড়া মেট্রোরেল চলাচল করবে রাজধানীতে। মিরপুর-ফার্মগেট হয়ে এই ট্রেনে সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম। ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটের ২৪ সেট রোলিং স্টক থাকবে। প্রতি সেটে থাকবে ৬টি কার। এর গতিবেগ হবে প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। উভয়দিকে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হবে।
একনেকে অনুমোদনের পর এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধাপের মধ্যে ২০১৩ সালের ৩ জুন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে নিবন্ধিত হয়। ২০১৩ সালে ১৯ নভেম্বর জেনারেল কনসালটেন্ট, এনকেডিএম অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ৯২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি চুক্তি হয়। প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে মেট্রোরেল বাস্তবায়নে। এতে থাকছে ১৬টি স্টেশন। এগুলো হলো উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় স্মরণী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল।