বাংলাদেশে ‘অনুপ্রবেশকারী’ ফেরাতে কাজ শুরু হয়েছে: সু চি
প্রকাশ: ২০১৭-১০-২৫ ২২:১৪:২২
বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতা অং সান সু চি।
বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ কথা বলেন সু চি।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না দেশটির প্রশাসন।
তারা রোহিঙ্গাদের ‘অবৈধ বাঙালি অভিবাসী’ সম্বোধন করে থাকে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক মনে করে। বাংলাদেশে আশ্র্রিত রোহিঙ্গাদের সরকারিভাবে শরণার্থী স্বীকৃতি না দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে নিরাপত্তা চৌকিতে হামলায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হওয়ার পর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরু হয়।
অভিযানে রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভাবে দমন-পীড়ন চালালে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে।
এ পর্যন্ত প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। আগে থেকে আরও চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল। সব মিলিয়ে বর্তমানে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখ।
এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আলোচনা করতে তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার মিয়ানমার যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল।
বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে দেশটির নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করে প্রতিনিধিদলটি।
এতে সু চি বলেন, সংকট সমাধানে মিয়ানমার কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।
বৈঠক চলাকালে মিয়ানমারের উপদেষ্টা অং সান সু চিকে বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ পৌঁছে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ রক্ষার চেষ্টা করবেন বলে জানান সু চি।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার নেত্রী সু চির কাছে রোহিঙ্গা সমস্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে এসব বিষয়ে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে মঙ্গলবার নেইপিদোতে দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে একমত হয় দুই দেশ। এ সময় সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই করেন দুই দেশের নীতিনির্ধারকরা।
এর আগে সকালে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মিয়ানমার প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।