উৎসব প্রার্থনায় চলছে বড়দিন উদযাপন
প্রকাশ: ২০১৭-১২-২৫ ১৩:৩৩:১২
উৎসব-আনন্দ আয়োজন আর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে খ্রিস্টধর্মের অনুসারীরা উদযাপন করছে যিশুখ্রিস্টের জন্মতিথি বড়দিন। ফুল, রঙিন কাগজ আর আলোয় আলোয় সাজানো হয়েছে গির্জাগুলো। ক্রিসমাস ট্রি থেকে ঝুলছে আলোর মালা। খ্রিস্টের জন্মের ঘটনার প্রতীক গোশালাও বানানো হয়েছে।
বড়দিন শুরু হয়েছে সোমবার। তবে এর আগের রাত থেকেই উৎসবে মেতে উঠেন খ্রিস্টানরা। তাদের বাড়ি বাড়ি চলছে উৎসব।
দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বড়দিন উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, যিশুখ্রিস্টের মতে মানুষের পরিত্রাণের উপায় হল জগতের মাঝে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থান। পূর্ণ অন্তর, মন ও শক্তি দিয়ে তিনি ঈশ্বর ও সবাই মানুষকে ভালোবাসতে শিক্ষা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ সমস্যাসংকুল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যিশুখ্রিস্টের শিক্ষা ও আদর্শ খুবই প্রাষঙ্গিক বলে আমি মনে করি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সব ধর্মের মানুষ আবহমানকাল ধরে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ।
‘বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। আমি একটি সুখীসমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই,’ যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব দেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি বলেন, ন্যায়, শান্তি ও সত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রবর্তন করা ছিল যিশুখ্রিস্টের অন্যতম ব্রত।
‘বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য মহামতি যিশু নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। তার ন্যায়, জীবনাচরণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য মানব ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন। আজকের সমাজব্যবস্থায় তার শিক্ষা ও আদর্শগুলোকে অনুসরণ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’
রোববার রাত ১১টার দিকে বিভিন্ন গির্জা ও উপাসনালয়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বড়দিনের উদযাপন। সেখানে মঙ্গলবাণী পাঠের মাধ্যমে নিজের পরিশুদ্ধি এবং জগতের সব মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়।
সোমবার সকালে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালে হয় বড়দিনের প্রার্থনা। সার্বজনীন সে প্রার্থনায় অংশ নেয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হাজারও নারী-পুরুষ ও শিশু।
গির্জার পাশাপাশি খ্রিস্টানদের বাড়িতে বাড়িতে এবং রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে চলছে নানা অনুষ্ঠান। বিশেষ করে শিশুদের জন্য আলাদা আয়োজন করেছে পাঁচ তারকা হোটেলগুলো।