দুই বছর পর আলোচনায় উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া

প্রকাশ: ২০১৮-০১-০৯ ১২:১৮:০১


korea-01মুখোমুখি অবস্থানে থাকা দুই কোরিয়ার মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে। দুই বছর পর মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুই কোরিয়ার সীমান্ত এলাকার ‘যুদ্ধবিরতি গ্রাম’ পানজামুনে দুই পক্ষের আলোচনা শুরু হয় বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে হতে যাওয়া শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তরের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়েই প্রধানত এবারকার আলোচনা। বৈঠকে দুই কোরিয়ার সম্পর্ক নিয়েও প্রতিনিধিদল দুটির মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ দুই কোরিয়ার মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পিয়ংইয়ংয়ের ছোড়া রকেট ও পারমাণবিক পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় সিউল কেয়াসং শিল্প এলাকার একটি যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্প বাতিল করার পর দুই কোরিয়ার সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

এর পরপরই উত্তর কোরিয়া দক্ষিণের সঙ্গে টেলিফোনসহ সব ধরণের যোগযোগ বন্ধ করে দেয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও চাপ উপেক্ষা করে পিয়ংইয়ংয়ের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ও পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও দুই কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণে দেশটির শীর্ষনেতা কিম জং উনের আগ্রহের পর তা কমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
কিমের ভাষণের পর দুই কোরিয়ার মধ্যে টেলিফোন হটলাইন ফের চালু হয়; এরপর দক্ষিণের আলোচনার প্রস্তাবে পিয়ংইয়ংয়ের সাড়া আসে।

মঙ্গলবারের আলোচনায় দুই পক্ষেরই পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। দক্ষিণের দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পুনরেকত্রীকরণ মন্ত্রী ছো মিয়ং-গিয়ন। উত্তরের নেতৃত্বে আছেন দেশটির দক্ষিণ কোরিয়া বিষয়ক রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রধান রি সন-গোন।

আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগে দুই দল সাংবাদিকদেরও মুখোমুখি হয়।

“পিয়ংচ্যাং অলিম্পিক হতে যাচ্ছে শান্তির অলিম্পিক যেখানে উত্তরের অতিথিরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অন্যদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন। অনেকদিন বিচ্ছিন্ন থাকার পর আমাদের মধ্যে কথা হচ্ছে; যদিও আমার বিশ্বাস প্রথম পদক্ষেপই অর্ধেক পথ এগিয়ে নেবে। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া শান্তি ও পুনর্মিলনের পথে এগিয়ে যাক, জনগণেরও এটাই চাওয়া।”

উচ্চ পর্যায়ের এ আলোচনা নিয়ে আশবাদের কথা শুনিয়েছে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিরাও।

পিয়ংইয়ংয়ের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া এবারের অলিম্পিককে ‘শান্তির অলিম্পিক’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করে যাচ্ছে। কিমের ভাষণের পর দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন বলেছিলেন, দুই কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নে এ অলিম্পিক ‘চমৎকার সুযোগ’ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকা পিয়ংইয়ংয়ের জন্যও এ আলোচনা গুরুত্পূর্ণ; দুই কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ওঠার পথও খুলে দিতে পারে এবারের আলোচনা, আশা পর্যবেক্ষকদের।