কয়েক টুকরো গোল্ডেন গ্লোব

প্রকাশ: ২০১৮-০১-১১ ১৩:২০:৩০


বছরের প্রথম তারকাবহুল পুরস্কার অনুষ্ঠান গোল্ডেন গ্লোব। এ বছর এর ৭৫তম আসরটি বসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে। কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য ও যৌন হয়রানির প্রতিবাদে মুখর ছিল ২০১৮ সালের গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। তবে এসবের ভিড়েও কিছু টুকরো ঘটনা নজর কেড়েছে অনেকের। সেই সব নজর কাড়া ঘটনা।

গ্রেটা বিজয়ী নন, তবু সেরা

অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যান মঞ্চে টিপ্পনী কেটে বললেন, ‘চলুন দেখে নিই মনোনয়ন পাওয়া পুরুষ নির্মাতাদের তালিকা।’ এই বিভাগের মনোনয়ন নিয়ে শুরু থেকেই ছিল বিতর্ক। কারণ, মাডবাউন্ড ছবির নির্মাতা ডি রিস আর লেডি বার্ড নির্মাতা গ্রেটা গারউইগ এ বছর গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন পাবেন অনেকেই এমনটা ধারণা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো নারী নির্মাতা মনোনয়ন তালিকায় ঠাঁই না পাওয়ায় অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তবে সব ক্ষোভ উবে গেল সেরা চলচ্চিত্র (মিউজিক্যাল-কমেডি) হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জেতার পর। ছবির প্রযোজকেরা পুরস্কারটি গ্রহণ করতে এসে তা তুলে দেন নির্মাতা গ্রেটা গারউগের হাতে। তাঁকে পুরো ছবির কৃতিত্ব দিয়ে মূল মঞ্চ ছেড়ে দিলেন তাঁরা। নারী নির্মাতা হিসেবে মনোনয়ন না পেলেও তাঁর নির্দেশিত ছবির জয়ের মধ্য দিয়ে গ্রেটা ঠিকই নিজের যোগ্যতা বুঝিয়ে দিলেন। কালো পোশাকের তেজ আর গ্রেটার বিজয়ী হাসি বুঝিয়ে দিল হলিউডে বৈষম্যের দিন বুঝি ফুরিয়ে আসছে।

জোলি ছড়িয়েছেন দ্যুতি
মনোনয়ন তালিকায় নাম নেই অ্যাঞ্জেলিনা জোলির। পুরস্কার প্রদানকারী হিসেবে তিনি এসেছিলেন গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডসে। সঙ্গে ছিলেন দত্তক ছেলে ম্যাডক্স। অন্য হলিউড তারকাদের মতো ম্যাডক্সও হয়রানি ও বৈষম্যের প্রতিবাদস্বরূপ কালো পোশাকের সঙ্গে ‘টাইমস আপ’ পিন পরে মায়ের সঙ্গে হেঁটেছে লালগালিচায়। তা ছাড়া মেরিল স্ট্রিপ, এমা ওয়াটসন আর জেসিকা চ্যাস্টেইনের মতো জোলিও একজন নারী সমাজকর্মীকে নিয়ে অনুষ্ঠানে আসেন। জোলিকে সঙ্গ দেন লং উং। লং উংয়ের বই অবলম্বনেই জোলি তাঁর সর্বশেষ ছবি ফার্স্ট দে কিলড মাই ফাদার বানিয়েছেন।

মঞ্চে যখন ১০১ বছরের কার্ক
জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা কার্ক ডগলাস গত ৯ ডিসেম্বর জীবনের ১০১তম বছর শুরু করেন। সেই অভিনেতা যখন গোল্ডেন গ্লোব মঞ্চে ওঠেন, তখন সেটা হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আবেগময় মুহূর্ত। কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যমের ভাষায়, সেসিল বি ডিমিল আজীবন সম্মাননা জয়ী অপরাহ্ উইনফ্রের শক্তিশালী বক্তৃতার পর মঞ্চে কার্কের উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত। কার্ক তাঁর ছেলে মাইকেল ডগলাসের স্ত্রী অভিনেত্রী ক্যাথরিন জেটা জোনসের সঙ্গে ওঠেন মঞ্চে। মঞ্চে উঠতেই মিলনায়তনের সবাই তাঁকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানায়। শতবর্ষী কার্ক আপ্লুত কণ্ঠে জানান, তিনি এ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আনন্দিত। কার্ক এসেছিলেন সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কারটি বিজয়ীর হাতে তুলে দিতে।

নিকোলের ভালোবাসা
‘বিগ লিটল লাইস’ সিরিজের জন্য সেরা অভিনেত্রীর (টেলিভিশন লিমিটেড সিরিজ)-এর গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জিতেছেন নিকোল কিডম্যান। মঞ্চে উঠে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সবাইকে। নারী অধিকার নিশ্চিত করতেও বলেছেন দু-চার কথা। তবে সবাই বিগলিত হয়ে গেছে যখন নিকোল তাঁর স্বামী কিন আরবানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। পুরস্কার হাতে নিজের অনুভূতি প্রকাশের শেষ দিকে গিয়ে নিকোল বলেন, ‘তোমার গাল যখন আমার গাল ছুঁয়ে যায়, তখন সবকিছু ধুয়েমুছে যায়। তোমাকে ভালোবাসি।’

এএফপি, হাফিংটন পোস্ট ও ভ্যারাইটি অবলম্বনে