নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে প্রয়োজন স্বল্পসুদে ঋণ

ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২৪ ২৩:৫০:০৯


নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ সুবিধার আওতায় আনতে হবে। যারা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করবেন তাদের দিতে হবে স্বল্পসুদে ঋণ। এ ছাড়া তদারকির দায়িত্বে থাকা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে সার্বক্ষণিক তদারকি, অভিযান পরিচালনা, আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদক থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যায়ে কার্যকর ভ্যালু চেইন গড়ে তোলা দরকার।

‘জাতীয় কৃষিনীতি ও নিরাপদ খাদ্যে বিনিয়োগ কৌশল’ শীর্ষক এক সংলাপে এসব কথা বলেন বক্তারা। মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) এই সংলাপের আয়োজন করে নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত নেটওয়ার্ক বিসেফ ফাউন্ডেশন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, কৃষি নীতিকে শুধু শস্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। এ নীতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে যুক্ত করতে হবে। দেশের প্রেক্ষাপটে পুষ্টিজাতীয় নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ এখনও বড় চ্যালেঞ্চ। এ জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা নিতে হবে। নজর দিতে হবে প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও।

সংলাপে সমবায়ের ভিত্তিতে নিরাপদ মাছ উৎপাদনের সফলতা তুলে ধরেন কুমিল্লার প্রতিষ্ঠান শিশুকের নির্বাহী পরিচালক সাকিউল মিলাত মোর্শেদ। দেশে একটি নিরাপদ খাদ্য ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেন হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও বিসেফ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান মিটুন।

অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার সবস্তরে বিশেষ করে ক্ষুদ্র উৎপাদক ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে অর্থায়ন সহজলভ্য করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য ফাউন্ডেশনটি পিকেএসএফের (পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন) আদলে করলে ভবিষ্যতে ভালোভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কৃষিকেই প্রবৃদ্ধির একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে ধরতে হবে। নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থার বিরাজমান সবল ও দুর্বল দিকগুলো শনাক্ত এবং করণীয় চিহ্নিত করতে হবে। নিরাপত্তার নামে কৃষক ও খামারিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। আর আমের মৌসুমে আম পাড়ার ভ্রান্ত সময় নির্ধারণ এবং অভিযান পরিচালনার নামে আতঙ্ক সৃষ্টি দূর করতে হবে।

হরটেক্স ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. মনজুরুল হান্নান বলেন, উৎপাদক থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বিপণন পর্যায়ে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। আম পাড়ার ভ্রান্ত সময় নির্ধারণ কেন? এর কারণে কৃষক ক্ষতির শিকার হচ্ছে, বিধায় এ প্রথা তুলে দেয়া প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও বিসেফ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার ফারুক বলেন, দেশের সকল মানুষের নিরাপদ খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে অর্থায়নের কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য বরাদ্দকৃত ভর্তুকির টাকার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। কৃষির উন্নয়নে দিতে হবে স্বল্প সুদে ঋণ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোর্শেদ আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হক।