৬৮ বছর পর মোবাইল হারবার ক্রেন পাচ্ছে মোংলা বন্দর
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-০৭-৩০ ০৯:১৫:৩৮
দ্রুততম সময়ে ও দক্ষতার সঙ্গে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য একটি মোবাইল হারবার ক্রেন সংগ্রহ করতে যাচ্ছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছর পর এই প্রথম মোংলা বন্দরে এ ধরনের ক্রেন সংযুক্ত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ১৪ সারিবিশিষ্ট কনটেইনার বোঝাই জাহাজে কনটেইনার লোডিং-আনলোডিং করা যাবে।
জার্মানির বিখ্যাত ক্রেন ম্যানুফ্যাকচারার লিভের ব্র্যান্ডের মোবাইল হারবার ক্রেনটির এলসি উন্মুক্তকরণের ২৫০ দিনের মধ্যে এর টেস্টিং কমিশনিং সম্পন্ন করা যাবে। এজন্য ব্যয় হবে ৪২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বাংলাদেশের সাইফ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড মোবাইল হারবার ক্রেনটি সরবরাহ করবে। ২৯ জুলাই নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ক্রেনটি সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মোংলা বন্দরে বর্তমানে গিয়ারলেস জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের উপযোগী কোনো ক্রেন নেই। মোবাইল হারবার ক্রেনটি সংগৃহীত হলে কনটেইনারবাহী জাহাজ/বার্জ দ্রুত হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে। বিদ্যমান জেটিতেই প্রতি বছর ৩৬টির বেশি অতিরিক্ত কনটেইনারবাহী জাহাজ/বার্জ হ্যান্ডল করা যাবে। ফলে বন্দরের মুনাফা ১২ কোটি টাকার বেশি বাড়বে।
ক্রেনটি কমিশনিংয়ের পর পানগাঁও থেকে ছোট জাহাজ বা বার্জে করে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার পরিবহন সম্ভব হবে। ঘণ্টায় গড়ে ২০-২৫টি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের উপযোগী এ ক্রেন বন্দরে জাহাজের টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম কমিয়ে আনবে। ফলে আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনগুলো মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হবে। এছাড়া বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডর ও শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শাজাহান খান বলেন, মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছর পর এ ধরনের একটি ক্রেন সংগ্রহ করা হচ্ছে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে মোংলা বন্দর লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরে এসেছে। ২০০১-০৬ মেয়াদে বন্দরের লোকসান হয়েছিল ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অথচ গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) বন্দরের মুনাফা হয়েছে ৯৫ কোটি টাকা।
মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার মোংলা বন্দরের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৪৫৪ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প ও চারটি উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে নয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। আরো ছয়টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।