প্রথম দিনে ১৩২৬টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১১-১২ ২৩:০৬:৫২
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে প্রথম দিনে ১৩২৬টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে বিএনপি।
সোমবার (১২ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১১টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম চলে। মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষে রাত ৮টার পর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে এসময় বিভাগভিত্তিক বিক্রি হওয়া মনোনয়নপত্রের সংখ্যা জানাতে পারেননি তিনি।
এসময় তিনি আরও জানান, নির্বাচনের তারিখ পেছানোর কারণে দলের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের সময়ও বাড়ানো হয়েছে। এর আগে, ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার তারিখ ঠিক করা থাকলেও এখন আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা যাবে ও জমা দেওয়া যাবে।
এদিন, সকাল পৌনে ১১টায় দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনী-১ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কেনার মাধ্যমে দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র কেনেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর বগুড়া-৬ আসনের জন্য খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়ন ফরম কেনেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম কেনেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এরপর ঠাকুরগাঁও-১ আসনে নিজের জন্য মনোনয়ন ফরম কেনেন বিএনপি মহাসচিব।
মনোনয়ন ফরম বিক্রি কার্যক্রম শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির ভিত্তিতে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি স্বৈরশাসনের অবসান এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি, আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। এর মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করব এবং আমরা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত কিছুই নেই। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার চলছেই। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি এগুলো বন্ধ করার জন্য। এগুলো বন্ধ না হলে অবশ্য আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করব।’
উল্লেখ্য, বিএনপির মনোনয়ন ফরমের দাম রাখা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় আগ্রহী প্রার্থীদের জমা দিতে হচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা। ফরম জমা দেওয়ার সময় বাকি ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে তাদের।
এর আগে, গত ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৯ নভেম্বর।
তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ তাদের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। তবে বিএনপি ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নবগঠিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই তফসিল সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন। তবে রোববার (১১ নভেম্বর) ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়, আন্দোলনের অংশ হিসেবেই তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। একই সময়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তারা নির্বাচনে যাচ্ছে। তবে উভয় জোটের পক্ষ থেকেই নির্বাচন একমাস পেছানোর দাবি জানানো হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে।
পরে আজ সোমবার সিইসি নুরুল হুদা জানান, এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পরে সন্ধ্যায় পুনঃতফসিলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯ নভেম্বরের পরিবর্তে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীরা ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারবেন কমিশনে।