ধর্মীয় সভা-সমাবেশে বাধা নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১১-২৭ ১৫:০৬:৪১
অবশেষে ওয়াজ মাহফিলের ওপর বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়ে ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা ওই রূপ জমায়েতের ব্যাপারে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসি।
সোমবার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক অফিস আদেশে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে-নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়ে এ ধরনের ধর্মীয় সভা-সমাবেশ করতে কমিশন নিষেধ করেনি।
শুধু বলা হয়েছিল-কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে প্রচার না চালানোর জন্য।
একই সঙ্গে নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে এ রূপ সভায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া নির্বাচনের আগে পূর্বঘোষিত ওয়াজ মাহফিল ছাড়া নতুন কোনো ওয়াজ মাহফিল না করতে অনুরোধ করা হয়েছিল।
তবে ধর্মীয় স্পর্শকাতর এসব ইস্যু নিয়ে সমালোচনা প্রতিরোধে এ চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং অফিসার বা তার প্রতিনিধির অনুমতি সাপেক্ষে সভা-সমাবেশ করার নির্দেশনা প্রদান করেছে।
নতুন চিঠিতে ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় জমায়েত বা কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান কেউ করতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করতেও নির্দেশনা দেয়া হয়।
৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ওয়াজ মাহফিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে বুধবার নির্বাচন কমিশনকে আইনি নোটিসও পাঠানো হয়েছে।
ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরিফের আন্তর্জাতিক ওয়াজ আয়োজক কমিটির সদস্য মুহম্মদ মাহবুব আলম ও সেই ওয়াজের অন্যতম বক্তা আবুল খায়ের মুহম্মদ আজিজুল্লাহর পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শেখ ওমর শরীফ এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এর পর কমিশন সোমবার সন্ধ্যায় নতুন করে চিঠি ইস্যু করে আগের চিঠির ব্যাখ্যা দেয়। একই সঙ্গে বলা হয়, ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা এমন জমায়েতের বিষয়ে একটি মহল বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছে।
এ ধরনের অপপ্রচারে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কমিশনের পক্ষ থেকে ওয়াজ বা ধর্মীয় জমায়েতের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি বলে নতুন চিঠিতে দাবি করা হয়।
এ সময় আগের চিঠির ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, পূর্বনির্ধারিত বা ইতিমধ্যে অনুমোদিত কোনো ধর্মীয় জমায়েতে বাধা নেই।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে এবং নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে পূর্বনির্ধারিত ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মীয় জমায়েত ছাড়া নতুন করে ৩০ ডিসেম্বরের পর অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ করা হয়েছিল।
সেই সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বা বিশেষ বিবেচনায় ৩০ ডিসেম্বরের আগে অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থী, রাজনৈতিক দলের সদস্য বা অন্য কেউ কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচার অথবা কারও পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য না দেন, সে জন্য কমিশন বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছে।
ইসি যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খানের সই করা নতুন চিঠিতে বলা হয়, ধর্মীয় সভা, ওয়াজ মাহফিল বা অনুরূপ জমায়েতসংক্রান্ত একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে অপপ্রচার রোধে এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অপচেষ্টা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে এমন ধর্মীয় সভা বা জমায়েত আয়োজনে ক্ষেত্রবিশেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে।
একই সঙ্গে এ ধরনের অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি অনুসারে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য দেয়া যাবে না বলেও কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়।