বগুড়ায় খালেদার বিকল্প ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১১-২৮ ১৪:০৯:২১
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে। তবে একই আসনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও রাখা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহমেদের কাছে বুধবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া একই আসনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাইফুল ইসলাম বলেন, কোনো কারণে যদি খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন তাহলে এ আসন থেকে মির্জা ফখরুল নির্বাচন করবেন। অনলাইনে মির্জা ফখরুলের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারা ভোগ করছেন। আইন অনুযায়ী খালেদার এ কারাদণ্ড আপিলে স্থগিত না হলে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে দুর্নীতির মামলায় বিএনপির পাঁচ নেতার দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে করা আবেদনে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, সংবিধান অনুসারে ফৌজদারি অপরাধে দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে এবং রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন থাকলে দণ্ডিত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
হাইকোর্টের ওই রায় আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় বিএনপির ওই পাঁচ নেতাসহ খালেদা জিয়া নির্বাচন করার পথও কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানও এমনটাই জানিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের পুনঃতফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আজ (২৮ নভেম্বর, বুধবার) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। প্রার্থীদের মনোনয়পত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর।
কোনও ব্যক্তি দুই বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সাজা স্থগিত চেয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেনের করা আবেদনের শুনানি করে বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ‘নো অর্ডার’ দেন।
এর ফলে হাইকোর্টের দেওয়া আগের আদেশই বহাল থাকছে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দুই বছরের বেশি সাজায় দণ্ডিত কারও আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকছে না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
এর আগে মঙ্গলবার বিএনপি নেতা আমান উলাহ আমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মো. মশিউর রহমান ও মো. আব্দুল ওহাবের পক্ষে দণ্ড ও সাজা বাতিলের আবেদন করা হয়েছিল।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আবেদন খারিজ করে দেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেটার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল বা স্থগিত করে তাকে জামিন দেন।