বেড়েছে মাথাপিছু রাজস্ব আয়
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১২-০২ ১৪:৪৩:১৪
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় (আদেশ নং-৭৬) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গঠিত হয়। এরপর থেকে সংস্থাটি অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ করে আসছে।
স্বাধীনতার ৪৭ বছরের দীর্ঘ পথচলায় এনবিআর মাথাপিছু রাজস্ব সাড়ে ৫০০ গুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। প্রতি বছরই এর পরিমাণ বাড়ছে। এনবিআর গঠনের পর বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেটে সংস্থাটিকে ২৫০ কোটি ৭১ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়।
তখন ১৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা আদায় করতে সক্ষম হয় এনবিআর। যদিও সে সময় জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি (যদিও স্বাধীনতার পর প্রথম আদমশুমারি হয় ১৯৭৪ সালে, তখন দেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৬৪ লাখ)। অর্থাৎ মাথাপিছু রাজস্ব আয় ছিল ২৩ টাকা।
শুরুতে এনবিআর রাজস্ব আদায়ে আমদানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক ও বিক্রয় করের ওপর নির্ভরশীল ছিল। যৎসামান্য আয়কর আদায় হতো।
তখন ১৬৬ কোটি টাকার মধ্যে আমদানি শুল্ক খাতে ৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, আবগারি শুল্ক হিসেবে ৫৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা, বিক্রয় কর হিসেবে ২০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা আয়কর ও অন্যান্য কর বাবদ ৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা করতে। এরপর থেকে প্রতি বছর রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
১৯৯১ সালে রাজস্ব আদায়ের পালে হাওয়া লাগে। তৎকালীন সরকার বিক্রয় করের পরিবর্তে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ব্যবস্থা চালু করে। এ আইনের অধীনে পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের ওপর ভ্যাটের পাশাপাশি সম্পূরক শুল্ক আদায় শুরু করে। নতুন ভ্যাট আইন চালু প্রথম বছরই পুরনো আয়করের কাছাকাছি রাজস্ব আদায় হয়।
১৯৯১-৯২ সালে ভ্যাট আদায় হয় ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকা, পক্ষান্তরে তখন আয়কর আদায় হয়েছিল ১ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। বছর না ঘুরতেই ভ্যাট পেছনে ফেলে আয়করকে। এরপর ভ্যাট রাজস্ব আদায়ের প্রধান হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
সর্বশেষ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২ লাখ ৬ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয় এনবিআর। বিবিএসের হিসাব মতে, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার ছিল।
সে হিসেবে মাথাপিছু রাজস্ব আয় দাঁড়ায় ১২ হাজার ৬৩৪ টাকা। অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাথাপিছু রাজস্ব আয় সাড়ে ৫শ গুণ বেড়েছে।