সেন্ট মার্টিনে রাতযাপনে বাধা নেই
আপডেট: ২০১৮-১২-০৯ ১৩:৫০:৪৭
সেন্ট মার্টিনে রাতে থাকা নিষিদ্ধ হচ্ছে না। আগের মতোই পর্যটকরা দ্বীপটিতে রাত ও দিনে অবস্থান করতে পারবেন। দ্বীপ রক্ষায় গঠিত একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিলেও সে স্থান থেকে সরে আসছে সরকার।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর সেন্ট মার্টিন দ্বীপ রক্ষায় গঠিত আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি এক সিদ্ধান্তে জানায়, আগামী ১ মার্চ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে শুধু দিনের বেলায় পর্যটকদের যেতে দেয়া হবে। পর্যটকদের ভারে বিপন্ন হতে চলা দ্বীপটিকে রক্ষায় সেখানে রাতযাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দ্বীপের অন্যতম জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা ছেঁড়া দ্বীপ ও গলাচিপা অংশে পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ৩ মাস যেতে না যেতেই তা থেকে সরে আসছে সরকার।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রাতে থাকার সিদ্ধান্তটি কার্যকর হচ্ছে না। পর্যটকদের রাতযাপন নিষিদ্ধ নিয়ে কোনও চিঠি মন্ত্রণালয় থেকে ইস্যু করা হয়নি।
তবে পর্যটন সূত্র জানায় সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের রাতযাপন নিষিদ্ধ করা না হলেও সেটা সীমিত করা হবে। কারণ পর্যটকদেরকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সেখানে অনেকগুলো হোটেল-মোটেলে গড়ে উঠেছে। এছাড়াও পর্যটকরাই এখানকার বাসিন্দাদের অন্যতম আয়ের উৎস হয়ে উঠেছেন। তাই পর্যটকদের রাতযাপন হঠাৎ বন্ধ করে দিলে তাদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ কারণে বিকল্প ব্যবস্থা চিন্তা করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সচিব মো. মহিবুল হক জানান, কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। পর্যটকরা আগের মতোই সেন্ট মার্টিনে রাতযাপন করতে পারবেন।
সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়দের কর্মসংস্থান এবং হোটেল-মোটেলে বিনিয়োগ করা ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের রাত্রিযাপনে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে দ্বীপটির পরিবেশ বিপর্যয়ের চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ২০ হাজার পর্যটক ও স্থানীয় ব্যক্তিদের চাহিদা মেটাতে দ্বীপের ভূগর্ভে থাকা সামান্য পানিটুকুও তুলে প্রায় নিঃশেষ করে ফেলা হয়েছে। যেকোনো সময় ভূগর্ভের ফাঁকা স্থানে সমুদ্রের লোনাপানি ঢুকে পড়তে পারে। এর ফলে দেশের সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ও সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যের আধার দ্বীপটি ধ্বংস হয়ে যাবে। পর্যটকদের মলমূত্র ও বর্জ্যের কারণে দ্বীপটির পানিতে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের (১৯৯৫) আওতায় ১৯৯৯ সালে সরকার সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। ওই আইন অনুযায়ী, দ্বীপের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। আরও চারটি আইনে ওই দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষার কথা বলা হয়েছে।কিন্তু সেটা কতটা মানা হচ্ছে- সেটাই এখন প্রশ্ন।