ইচ্ছামতো হিসাব প্রকাশ করেছে সোনালি আশঁ
পুঁজিবাজার ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৮-১২-১১ ১১:১৫:২০
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালি আশঁ কর্তৃপক্ষ তাদের ইচ্ছামতো আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে। যেখানে বাংলাদেশ হিসাব মান (বিএএস), শ্রমিক আইনসহ নানা ব্যত্যয় ঘটেছে। এরমাধ্যমে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে যেমন প্রতারণা করেছে, একইভাবে অতিরঞ্জিত মুনাফা ও সম্পদ দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
সোনালি আশেঁর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের পর্যবেক্ষনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সোনালি আঁশ কর্তৃপক্ষ পূণ:মূল্যায়নজনিত বৃদ্ধি পাওয়া স্থায়ী সম্পদের উপর অবচয় চার্জ করে না। বিএএস-১৬ অনুযায়ি, প্রযোজ্য হলেও ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে এমনটি করে আসছে। যাতে প্রতিবছর শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ও নিট সম্পদ বেশি দেখানো হচ্ছে বলে নিরীক্ষক তার পর্যবেক্ষনে বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
এদিকে বিএএস-৩৬ অনুযায়ি, স্থায়ী সম্পদ ইমপেয়ারমেন্ট করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সোনালি আশঁ কর্তৃপক্ষ তা করে না। এরমাধ্যমেও প্রতিবছর নিট সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখানো হচ্ছে।
বিএএস-১২ অনুযায়ি, পূণ:মূল্যায়নজনিত কারনে বৃদ্ধি পাওয়া স্থায়ী সম্পদের উপরে ডেফার্ড টেক্স গণনা করতে হয়। যা সোনালি আশেঁর জন্য ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে কার্যকর হলেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তা করে না।
গ্রাহক সাইফুল এন্টারপাইজের কাছে ২০১৬ সাল থেকে সোনালি আশেঁর ৭৬ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু গ্রাহক সেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় পাওনা টাকা আদায় নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। যাতে উক্ত সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে সঞ্চিতি গঠন করা প্রয়োজন হলেও সোনালি আশঁ কর্তৃপক্ষ তা করছে না। এর মাধ্যমে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখানো হচ্ছে।
২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুাযায়ি, সোনালি আশঁ কর্তৃপক্ষ ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে ৫২ লাখ টাকার শ্রমিক ফান্ড গঠন করেছে। কিন্তু ফান্ডের দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিবছর শ্রমিকদের মধ্যে বিতরনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা করা হয় না। এমনকি ফান্ডের বাকি অংশ লাভজনক খাতে বিনিয়োগের বিধান থাকলেও তা করা হয় না। যাতে ফান্ডের উক্ত টাকায় কোন সুদ বা লাভ যোগ হয়নি।
কোম্পানিটির ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ২২৯.৪৭ মেট্রিক টন প্রসেস লোকসান হয়েছে। যা ওই অর্থবছরে মোট উৎপাদনের ৪.৫২ শতাংশ। কিন্তু আগের বছরে এ জাতীয় কোন লোকসান হয়নি। এছাড়া উক্ত লোকসানের বিপরীতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষককে সন্তোষজনক প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
সোনালি আশঁ একটি রপ্তানিকারক কোম্পানি। এমতাবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত কারনে লাভ বা ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক। যে কারনে আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-২১ অনুযায়ি, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত কারনে লাভ বা ক্ষতি আর্থিক হিসাবে দেখাতে হয়। কিন্তু সোনালি আঁশ কর্তৃপক্ষ তা করেনি।
উল্লেখ্য, সোমবার (১০ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে সোনালি আশেঁর শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৭৮৫.৬০ টাকায়।