সিলিন্ডার নয়, গ্যাস জমে ঘটে বিস্ফোরণ: জ্বালানি সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১২-১৪ ১৩:০২:১২
সিলিন্ডার থেকে নয়, গ্যাস লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাই অসচেতনতা, অসাবধানতা আর অজ্ঞতাই এলপিজিতে অগ্নিকান্ডের প্রধান কারণ। এজন্য সিলিন্ডার ব্যবহারে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিচ্ছে জ্বালানি বিভাগ। যা প্রচার হবে গণমাধ্যমেও।
বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এই কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সচিব জানান, দুর্ঘটনাগুলার প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোনো সিলিণ্ডারের বিস্ফোরন ঘটে না। সিলিণ্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ হয়ে ঘরে জমা হয়ে পরে বিস্ফোরণ হয়। তিনি বলেন, অসাবধানতা, অজ্ঞতা আর অসচেতনতার জন্য এলপিজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। তাই, সিলিন্ডার ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য কিছু নির্দেশনা প্রচার করা হবে। টিভি, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং রাস্তায় নানা ধরনের লিফলেট দিয়ে সচেতন করা হবে।
এছাড়াও, গাড়ীতে সিএনজির চেয়ে এলপিজি বেশি নিরাপদ। ফলে সিএনজির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানান, জ্বালানি সচিব।
সম্মেলনে এলপিজি দুর্ঘটনা নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. সামসুল আলম।
প্রেজেন্টেশনে সচেতনতার বিষয়গুলোতে বলা হয়েছে, সিলিন্ডার আগুনে বা অন্যভাবে গরম হলে তরল এলপিজি দ্রুত গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে অস্বাভাবিক চাপ বৃদ্ধির ফলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে পারে। এজন্য সিলিন্ডার কোনোভাবেই চুলার বা আগুনের পাশে রাখা যাবে না। এতে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত গ্যাস বের করার জন্য এলপিজি সিলিন্ডারে তাপ দেওয়া যাবে না। রান্না শেষে চুলা ও এলপিজি সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। গ্যাসের গন্ধ পেলে ম্যাচের কাঠি জ্বালানো যাবে না। ইলেকট্রিক সুইচ এবং মোবাইল ফোন অন বা অফ করা যাবে না। পাশাপাশি ঘরে গ্যাসের গন্ধ পেলে দ্রুত দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে এবং এলপিজি সিলিন্ডারের রেগুলেটর বন্ধ করতে হবে। রান্না শুরু করার আধাঘণ্টা আগে রান্না ঘরের দরজা জানালা খুঁলে দিতে হবে। এলপিজি সিলিন্ডার খাড়াভাবে রাখতে হবে। কখনই উপুড় বা কাত করে রাখা যাবে না। চুলা সিলিন্ডার থেকে নিচুতে রাখা যাবে না। কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি উপরে রাখতে হবে। চুলা থেকে যথেষ্ট দূরে বায়ু চলাচল করে এমন স্থানে এলপিজি সিলিন্ডার রাখতে হবে। রান্না ঘরের উপরে ও নিচে ভেন্টিলেটর রাখতে হবে। সিলিন্ডারের ভাল্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেগুলেটর ব্যবহার করতে হবে।
প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. সামসুল আলম বলেন, সারাদেশে যেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে আমরা তদন্ত করে দেখি। কোথাও সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে না। রান্নাঘরে গ্যাস জমে থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আবার অন্যক্ষেত্রে বাইরে থাকলে ভাল্ব দিয়ে অতিরিক্ত গ্যাস বের হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমাদের সবার আগে গ্রাহক সচেতনতার দিকে নজর দিতে হবে।