গত দশকে সুবিধা করতে পারেনি বীমা খাত
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১২-২৪ ১১:০৭:৪৩
দেশের অধিকসংখ্যক মানুষকে বীমা সুবিধার আওতায় আনতে বীমা খাতে ২০১৩ সালে দুই দফায় লাইসেন্স পায় ১৫টি বীমা কোম্পানি। এর মধ্যে জীবন বীমা কোম্পানি ১৩টি ও সাধারণ বীমা দুটি।
নতুন জীবন বীমা কোম্পানিগুলো হলো এনআরবি গ্লোবাল, প্রটেক্টিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ, স্বদেশ লাইফ, বেস্ট লাইফ, জেনিথ লাইফ, ট্রাস্ট লাইফ, মার্কেন্টাইল লাইফ, আলফা লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, চার্টার্ড লাইফ, সোনালী লাইফ ও গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া নতুন অনুমোদন পাওয়া দুটি সাধারণ বীমা কোম্পানি হলো সিকদার ইন্স্যুরেন্স ও সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) তথ্যমতে, নতুন বীমা কোম্পানির ৮৮ শতাংশ ব্যবসাই তামাদি হয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে না জানিয়েই অননুমোদিত খাতে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বীমা কোম্পানির যেকোনো ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অনুমোদনের বিধান রয়েছে। কিন্তু নতুন বীমা কোম্পানিগুলো গাড়ি কিনতে যে ঋণ নিয়েছে, তার কোনো অনুমোদন দেয়নি আইডিআরএ।
ব্যবসা ও নবায়ন প্রিমিয়াম আয় সেভাবে না থাকলেও শুধু ব্যবস্থাপনার কাজে প্রারম্ভিক মূলধনের ৪ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে নতুন অধিকাংশ জীবন বীমা কোম্পানি। মূলত বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয় ও অফিস ভাড়া দিতেই এ অর্থ ব্যয় করেছে তারা।
বিভিন্ন জেলায় শাখা খুলে ব্যবসা করলেও তাতে সাফল্য পায়নি নতুন বীমা কোম্পানিগুলো। বাধ্য হয়ে একের পর এক শাখা বন্ধ করছে তারা। এমন একটি বীমা কোম্পানি চার্টার্ড লাইফ। দেশজুড়ে ১৫টি শাখা ছিল বীমা কোম্পানিটির। তবে রংপুর ও নোয়াখালীর শাখা দুটি বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একইভাবে ১৭টি শাখার মধ্যে খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও কুমিল্লার পাঁচটি শাখা বন্ধ করে দিয়েছে প্রটেক্টিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। দিনাজপুর ও বদরগঞ্জের দুটি শাখা বন্ধ করে দিয়েছে যমুনা লাইফ। চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ বেশকিছু অঞ্চলের ১৫টি শাখা বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। বন্ধ হয়ে গেছে বেস্ট লাইফ ও এনআরবি গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের প্রায় ১৫টি শাখাও।
বীমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবীর হোসেন বলেন, দক্ষ লোকবল সংকটের পাশাপাশি নতুন বীমা কোম্পানিগুলোর পলিসিতে নতুনত্ব নেই। ফলে গ্রাহক আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) এ ব্যাপারে ভূমিকা রয়েছে। নতুন কোম্পানিগুলোকে আরো সময় দিতে হবে। পাশাপাশি তারা কীভাবে ভালো করবে, তার জন্যও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সঠিক দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।