বাংলাদেশ স্কুল ও কলেজে বিজয়মেলা ও পিঠা উৎসব কাতারে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আপডেট: ২০১৮-১২-২৪ ১৯:৫৭:৫৫
বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস কাতার ও বাংলাদেশ এম.এইচ.এম স্কুল এ্যান্ড কলেজ’র যৌথ আয়োজনে কাতারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজয়মেলা ও পিঠা উৎসব।
লাখো শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২১ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে স্কুল ক্যাম্পাসে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও প্রধান অতিথি মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব আসুদ আহমদ বেলুন উড়ানোর মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করেন বিজয় মেলার অনুষ্ঠানের।
একই সঙ্গে শুরু হয় পিঠা উৎসব। মেলা শুরুর পর থেকেই নতুন আর পুরোনো শিক্ষার্থী ও হাজারো কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি দর্শণার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো অনুষ্ঠানস্থল।
একদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত বিজয় উৎসব অন্যদিকে দেশীয় পিঠাপুলি মিষ্টির মৌ মৌ গন্ধ আর বাংলাস্কুলের শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনে মুগ্ধ হন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা।
বিজয় দিবসকে ঘিরে স্কুল প্রাঙণে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তবে দেশের চাইতে যেন প্রবাসে উৎসাহ-উদ্দীপনা ব্যাপক।
মেলায় আসা স্টলগুলোকে সাজানো হয়েছে রং তুলির আল্পনায় নতুন এক রুপে। পুরো স্কুলটিতে রং বেরঙের আলোকসজ্জা ও পতাকা যেন বিজয়ের স্মারকচিহ্ন ফুটিয়ে তোলা লাখো মুক্তিকামী বাঙালিকে বরণ করতে যেন অদৃশ্যভাবে জাগ্রত হয়েছে বিজয়ের এ মাসে নতুন এক রুপে।
দীর্ঘদিন পর পুরনো ক্যাম্পাসে ফিরে আনন্দিত শিক্ষার্থী ও দর্শণার্থীরা। বন্ধুদের সঙ্গে একে অপরে সেলফী ও ছবি তুলে স্মৃতিচারণ করে সময় পার করেছিলেন তারা।
ইলিশের বাড়ী চাঁদপুর’ সে প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মেলায় অংশগ্রহণ করতে আসা ‘চাঁদপুর সমিতি কাতার’ এর একটি ষ্টল’ চাঁদপুর সমিতির আড্ডা’র’ সভাপতি মো. মানিক হোসেন বলেন,কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর সম্পর্কে অবহিত করাই আমাদের এ চাঁদপুর সমিতির আড্ডা।
এদিকে ঢাকা জেলার সৈয়দা আফরোজা নাহার তার শখের বসে শিখা দেশীয় পিঠা-পুলিসহ দেশীয় মজাদার খাবারে সজ্জ্বিত ‘বিজয়ের পিঠা ঘর’ নামে ষ্টল নিয়ে এসেছিলেন মেলায়। যেখানে রয়েছে নকঁশী পিঠা, ফুচকা, চিকেন রোল, কুলি পিঠা, পাককন পিঠা ও ডিম পিঠাসহ রকমারী খাবার। তিনি বলেন, দেশীয় পিঠাকে বিদেশের মাটিতে তুলে ধরার জন্য এগুলি তৈরী করে নিয়ে এসেছি।
মেলায় প্রথম ঘুরতে আসা একজন দর্শনার্থী সিলেট মৌলভীবাজার’র ‘ শাহিনা ইয়াসমিন শরীফা বলেন, ‘আমি ফয়লা প্রবাসর এক বিজয় মেলাত আইছি। ইকানো আইয়া মন ওর যেন কাতরর বুকে একখন্ড বাংলাদেশ। এরলাগি বিজয়মেলাত আইয়া বাক্কা ভালা লাগের।’ তার সঙ্গে আছেন মো. আফজালুর রহমান, তিনি ও তার কথার সঙ্গে একমত। ঢাকা জেলার রেখা চৌধুরী তার ৪০ বছরের প্রবাস জীবনে ৪০ বার বিজয় উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন শুধুমাত্রর নিজ মাতৃভূমির ভালবাসায়।
এছাড়া মেলায় রকমারী আয়োজনের ষ্টল নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করেছিল ‘বাংলাদেশ এম.এইচ.এম স্কুল এ্যান্ড কলেজ ষ্টোর’, রূপসী বাংলা রেষ্টুরেন্ট, মধুবন, আল- রীম ট্র্যাভেলস, মো. কালাম নূর মোহাম্মদ বিরিয়ানী হাউস, রকমারী দেশীয় খাবার ষ্টল, ডেনিস ফুড, fun& Gaimes, ফ্রেন্ডস হাউস, ও স্কুল শিক্ষার্থীদের গেইমিং সেন্টার ষ্টল।
মেলা পরিদর্শন করতে আসা প্রধান অতিথি মান্যবর রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ বলেন,
আমাদের বিজয় দিবস সারা বংলাদেশে চলছে সেটির অংশ হিসেবে আমরা প্রবাসে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশী আছি। আমরা সবাই আজ বিজয়ের চেতনায় উদ্বোদ্ধ হয়েছি। ১৮ ডিসেম্বর কাতার যেভাবে তাদের জাতীয় দিবস পালন করেছে ঠিক সেভাবে ১৬ ডিসেম্বর আমরা আমাদের বিজয় দিবস পালন করেছি।
বিজয়ের চেতনায় কাতার যেভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে আমরা ও তাদের অনুসরণ করে এবং তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের মাতৃভূমি সোনার বাংলাদেশকে নিয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবো। এটাই হউক আমাদের সকলের প্রত্যাশা। তিনি দেশবাসী ও কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিজয়ের শুভেচ্ছা জানান।
বাংলা বিভাগের সহকারি প্রভাষক সৈয়দা ফারজানা শারমীন ও সহকারি ইংরেজী প্রভাষক গোলাম ফারুক সিদ্দীকির যৌথ সঞ্চালনায় বিজয়মেলা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এম.এইচ.এম স্কুল এন্ড কলেজ’র পরিচালক ল্যাফটেনেন্ট কমান্ডার আনোয়ার খুরশীদ(অব.),
অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন, উপাধ্যক্ষ জুলফিকার হায়দার,বাংলাদেশ দূতাবাসের কাজী মো. জাবেদ ইকবাল কাউন্সিলর(হেড অব সেঞ্চুরী),মো. মাহবুবুর রহমান (প্রথম সচিব), মো. আজগর হোসাইন (দ্বিতীয় সচিব), এ.কে.এম মনিরুজ্জামান চৌধুরী (দ্বিতীয় সচিব), নাজমুল হাসান (প্রথম সচিব- পাসপোর্ট,ভিসা), রবিউল ইসলাম কাউন্সিলর ( লেবার), ড. সিরাজুল ইসলাম কাউন্সিলর (লেবার) ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্মানিত নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ স্কুলের শিক্ষক- শিক্ষিকাবৃন্দসহ আরো অনেকে।