অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে কিশোরী

প্রকাশ: ২০১৫-১১-০৬ ২০:০২:০৩


barisal_23989_57699_3বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ধর্ষণের ফলে এক কিশোরী ৭ মাসের অন্ত:স্বত্তা হয়ে পড়েছে। অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে কিশোরীর পরিবার। স্থানীয় মাতুব্বররা প্রহসনের সালিশ ব্যবস্থা করেছে বলে জানা গেছে।

ধর্ষিতা ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের গৌহার গ্রামের রহমান বেপারীর ছেলে ও ছয়গ্রাম কলেজের এইচএসসি’র ছাত্র শাকিল বেপারী প্রতিবেশী এক দিনমজুরের মেয়েকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অন্ত:স্বত্তা হয়ে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয়দের কাছে বিচার দাবি করলে স্থানীয় মাতুব্বররা অসহায় ওই কিশোরীর পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো প্রভাবশালী ধর্ষকের পরিবারের সাথে হাত মিলায়। আর্থিক সঙ্গতি ও লোকজন না থাকার কারণে ধর্ষিতার পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে পারেনি। বর্তমানে কিশোরী ৭ মাসের অন্ত:স্বত্তা হয়ে পরে। অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয়ের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ধর্ষিতা ও তার পরিবার।

গত বুধবার ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সাকিব হোসেন শান্ত’র নেতৃত্বে ধর্ষিতার বাড়িতে অবশেষে সালিশ বৈঠক বসায় মাতুব্বররা। ওই সালিশ বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মাতুব্বর হাজী লাল মিয়া গোমস্তা, আ. জলিল, মতলেব মুহুরী, ব্যাংকার ইসমাইল হোসেন গোমস্তা প্রমুখ। সালিশ বৈঠকে পবিত্র কোরআন শরীফ হাতে ধরিয়ে মেয়েকে মাতুব্বররা ঘটনার জন্য কে দায়ী জানতে চাইলে ধর্ষিতা মেয়ে শাকিলের নাম বলে। একইভাবে শাকিলকেও কোরআন নিয়ে বলতে বলা হলে শাকিল ঘটনার জন্য দায়ী নয় বলে জানায়। এসয় মাতুব্বররা ধর্ষিতার সন্তান প্রসবের জন্য মেয়েপক্ষকে ২৫ হাজার টাকা ও ছেলেপক্ষকে ২৫ হাজার টাকা তাদের কাছে জমা রাখার জন্য নির্দেশ দেন। এছাড়াও মাতুব্বররা রায় প্রদান করেন যে, সন্তান জন্মের পর তার ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে অপরাধী জন্মদাতা শনাক্ত করা হবে। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মাতুব্বরদের চাপের মুখে বর্তমানে ধর্ষিতার পরিবার থানায় গিয়েও আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না। এব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেনি। তারপরেও তিনি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।