১৫-১৭ ফেব্রুয়ারি তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০১-২৪ ১৭:৪০:২৮


তাবলগ জামাতের দুই পক্ষের চলমান  বিবাদ নিরসন হওয়ায় এবছরের বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তাবলীগ জামাতের বৃহত্তম এ ধর্মীয় আসরটি আগামী ১৫, ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার ২৪ জানুয়ারী  বিকালে বিশ্ব ইজতেমার এ তারিখ ঘোষণা করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তাবলিগ জামাতের বিবাদমান দু’পক্ষকে নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে  বৈঠক করেছিলেন। বৈঠক শেষে তিনি জানিয়েছিলেন ‘তাবলিগের দু’পক্ষের বিবাদ মীমাংসা হয়েছে তাদের মধ্যে আর কোনো বিরোধ নেই। ফেব্রুয়ারি মাসের যে কোনো সময় একসঙ্গে ইজতেমা হবে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দু’পক্ষের দু’জন প্রতিনিধি বসে ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করবেন।’

ওই সময় এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উনি (মাওলানা সা’দ কান্ধলভী) এবার আসবেন না। বৈঠকে সে রকম সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইজতেমা দু’বারে (দুই পর্ব) নাকি একবারে হবে, সে বিষয়ে  সিদ্ধান্ত হবে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ওই বৈঠকে ছিলেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেছিলেন, এবার ইজতেমা একটাই হবে। কোনো বিভক্তি হবে না। দু’পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভবিষ্যতেও যাতে একসঙ্গেই হয়, এজন্য যখন যা করা দরকার করা হবে।

তাই তাবলিগের মূল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে নিজামুদ্দীন মারকাজের সমান ক্ষমতা দাবি করে আলমি শুরা গঠন করে রাইভেন্ড মার্কাজ।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অংশদারিত্বের বিবাদে দিল্লি-লাহোর জড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়েই এর প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশে তাবলিগ জামায়াতের প্রধানকেন্দ্র কাকরাইল মসজিদেও ছড়িয়ে পড়ে এ বিভক্তি।

তাবলীগ জামাতের ১১ জন শুরা সদস্যের মাঝে ছয়জন নিজামুদ্দীনের পক্ষে থাকলেও বাকি পাঁচজন আলমি শুরার পক্ষে অবস্থান নেন। এ অংশের বিরোধিতায় বিগত বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ ও নিজামুদ্দীনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ এসেও ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ইজতেমায় অংশ না নিয়েই মাওলানা সাদকে ঢাকা ছাড়তে হয়।

পরে কাকরাইল মসজিদে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মুরব্বিদের উপস্থিতিতে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর তিন চিল্লার সাথীদের জোড় এবং ১১, ১২, ও ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন।

এর বিরোধিতা করে ডিসেম্বরের ৭ থেকে ১১ জোড় এবং জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে অপর পক্ষ। এরপর দু’পক্ষের কোন্দল চলতে থাকলে এ বছরের জানুয়ারিতে নির্ধারিত বিশ্ব ইজতেমা নির্বাচনের আগে স্থগিত করা হয়। কিন্তু তার মধ্যেই সাদপন্থীরা ডিসেম্বরের শুরুতে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার ঘোষণা দিলে দেওবন্দপন্থীরা টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ দখল করে পাহারা বসায়।

১ ডিসেম্বর ভোর থেকে সা’দের অনুসারী শত শত মানুষ টঙ্গীর পথে রওনা হলে পরিস্থিতি বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে দু’পক্ষের লোকজন বাঁশ ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে পড়ে প্রাণ যায় সত্তর বছর বয়সী এক বৃদ্ধের, দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে দু’পক্ষের অনুসারীদের বের করে দিয়ে ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তাবলিগ জামাতের ইতিহাসে এ প্রথম ইজতেমা ও জোড়ের তারিখ নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্ব নিরসন করতেই দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।