কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৯-০২-০৯ ১১:৩০:১৫


কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ নিয়ে কারবার করে থাকে এবং দেশের উন্নয়নে ও উভয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ।কিন্তু এই দুই প্রকার প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা সংগঠন ও কার্যাবলী তে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য সমূহ তুলে ধরা হলো।

 গঠন:

বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের কোম্পানি ও ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী গঠন করা হয়ে থাকে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের বিশেষ আইনের মাধ্যমে গঠন করা হয়ে থাকে।

উদ্দেশ্য:

বাণিজ্যিক ব্যাংকের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঋণের ব্যবসার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করা।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং ব্যবসা এবং মুদ্রা বাজার অভিভাবক হিসেবে সামগ্রিক স্বার্থে কাজ করে।

আমানত গ্রহণ:

বাণিজ্যিক ব্যাংক জনগণের নিকট হতে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে আমরা গ্রহণ করে থাকে।

কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনগণের নিকট হতে কোন প্রকার আমল গ্রহণ করে না।

সদস্য:

বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের মুদ্রা বাজারের সদস্য হিসেবে কাজ করে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের মুদ্রা বাজার অভিভাবক হিসেবে কাজ করে ।

নিয়ন্ত্রণ:

বাণিজ্যিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

 মালিকানা:

বাণিজ্যিক ব্যাংক সরকারি বেসরকারি ও সরকারি বেসরকারি মালিকানায় হয়ে থাকে ।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারি মালিকানায় হয়ে থাকে।

 সংখ্যা:

একটি দেশে একাধিক বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকে বা থাকতে পারে ।

অপরদিকে একটি দেশে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকে।

 শাখা:

বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশে-বিদেশে শাঁখা খুলে থাকে অথবা খুলতে পারে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাখা খুলতে পারে কিন্তু দেশ-বিদেশে কোন শাখা হতে পারেনা।

 প্রতিনিধিত্ব:

বাণিজ্যিক ব্যাংক গ্রাহক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সরকারের ব্যাংক হিসেবে কাজ করে।

নোট প্রচলন:

বাণিজ্যিক ব্যাংক নোট ও মুদ্রার প্রচারে সাহায্য করে থাকে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক  এককভাবে দেশের নোট প্রচলন করে থাকে।

 নিকাশ ঘর:

বাণিজ্যিক ব্যাংক নিকাশ ঘর পরিচালনা করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা করে থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের পারস্পারিক লেনদেনের নিষ্পত্তির জন্য নিকাশ ঘর পরিচালনা করে থাকে।

বৈদেশিক মুদ্রা:

বাণিজ্যিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করে থাকে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ হিসেবে কাজ করে থাকে।

উপদেষ্টা:

বাণিজ্যিক ব্যাংক গ্রাহকদের উপদেষ্টা ও তথ্য সরবরাহ কারী হিসেবে কাজ করে থাকে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের উপদেষ্টা ও তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে থাকে।

হিসাব দাখিল:

বাণিজ্যিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট প্রতি সপ্তাহে বাধ্যতামূলক বিভিন্ন হিসাব বিবরণ পেশ করে থাকে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক বছরের শেষে হিসাব বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করে থাকে।

অস্তিত্ব:

বাণিজ্যিক ব্যাংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তুলনায় দুর্বল হয়ে থাকে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের বিশেষ আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় বলে শক্তিশালী হয়ে থাকে।