তওবার সঠিক নিয়ম
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৪-১৫ ১৪:০৫:৩০
#_তওবা কিভাবে করতে হবে, তওবার সঠিক নিয়ম।
কারো তওবা কবুল হয়েছে কিনা এটা কিভাবে
বোঝার উপায়
১. পাপ কাজ করা বন্ধ করতে হবে। এখন শুধু মুখে
মুখে তওবা করি, কয়েকদিন পর থেকে পাপ কাজটা
ছেড়ে দেবো – এ রকম হলে তওবা হবে না।
২. অতীতের সমস্ত পাপ কাজ ও ভুল ত্রুটি আল্লাহর
কাছে স্বীকার করে তাঁর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত
হতে হবে।
৩. অন্তরে ঐকাজগুলোর প্রতি ঘৃণা রেখে
সেইগুলোতে আর ফিরে না যাওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা
করতে হবে।
৪. লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে সমস্ত
গুনাহ খাতার জন্য “ইস্তিগফার” করতে হবে (মাফ
চাইতে হবে) + “তওবা” করতে হবে (গুনাহ করা বন্ধ
করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে হবে)।
৫. কারো হক্ক নষ্ট করে থাকলে তাকে তার হক্ক
ফিরিয়ে দিতে হবে, অথবা যেইভাবেই হোক,
সামর্থ্য না থাকলে অনুরোধ করে, ক্ষমা চেয়ে
তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, তওবা করলে আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ
করে দেন, এমনকি কারো পাপ আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে
গেলেও আল্লাহ তাকে মাফ করে দেবেন। কিন্তু
বান্দার কোনো হক্ক নষ্ট করলে সেটা বান্দা মাফ না
করলে তিনি মাফ করবেন না।
৬. অন্তরে আশা রাখতে হবে, যে আমি গুনাহগার
কিন্তু আল্লাহ গাফুরুর রাহীম – অতীব ক্ষমাশীল ও
দয়ালু। সুতরাং তিনি আমার তওবা কবুল করবেন।
৭. তওবা করার পরে প্রাণপণে চেষ্টা করতে হবে
পাপ কাজ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে, এবং সাধ্য
অনুযায়ী বেশি বেশি করে নেকীর কাজ করার
চেষ্টা করতে হবে।
৮. যে পাপ কাজ থেকে তওবা করা হলো (সমস্ত
পাপ কাজ থেকেই তওবা করা ফরয), কোনো ভুলে
বা কুপ্রবৃত্তির কারণে পাপ কাজটা করে ফেললে
সাথে সাথে আবার তওবা করে সেটা থেকে ফিরে
হবে। এইভাবে যখনই কোনো পাপ হবে সাথে
সাথেই তওবা করতে হবে, মৃত্যু পর্যন্ত।
৯. কারো তওবা কবুল হয়েছে কিনা এটা কিভাবে
বুঝবেন ?
অনেক আলেম এ সম্পর্কে বলেনঃ কারো যদি
তওবা করার পরের জীবন আগের জীবন থেকে
ভালো হয় অর্থাত পাপের কাজ অনেক কমে যায় ও
ভালো কাজ বৃদ্ধি পায় তাহলে আশা করা যেতে পারে
– তার তওবা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে। কিন্তু
কারো যদি এমন না হয় অর্থাত, তওবার আগের ও
পরের জীবনে কোনো পার্থক্য না থাকে
তাহলে বুঝতে হবে তার তওবাতে ত্রুটি আছে। তার
উচিত হতাশনা হয়ে – বার বার আন্তরিকতার সাথে খালেস
নিয়তে তওবা করা, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে আন্তরিক তওবা করার
তওফিক দান করুন।
কি দুয়া পড়ে তওবা করতে হবে?
যেই দোয়া পড়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তওবা করতেন ও
আমাদেরকে পড়তে বলছেনঃ
উচ্চারণঃ ” আসতাগফিরুল্লা-হাল আ’যীমাল্লাযী লা- ইলা- হা
ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।
অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
যিনি ছাড়া ইবাদতের আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই।
যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছে তওবা
করছি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“যেই ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে আল্লাহ তাকে ক্ষমা
করে দেবেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে
পলাতক আসামী হয়”।
(অর্থাত, সে যদি বড় রকমের গুনাহগার হয়, তবুও
আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।)
তিরমিযী ৪/৬৯,
আবুদাঊদ ২/৮৫,
মিশকাত হা/২৩৫৩,
হাদীসটি সহীহঃ সিলসিলা ছহীহাহ
হা/২৭২৭।
(হিসনুল মুসলিমের ২৮৬ নাম্বার পৃষ্ঠায় এই দুয়া পাবেন।)
তওবার মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়, আমি চাই
যেই এই লেখা পড়বেন – এই দুয়াটা মুখস্থ করে
নিয়মিত উঠতে বসতে, যখনই মনে পড়বে বেশি
বেশি করে এই দুয়া পড়ে আল্লাহর কাছে মাফ
চাইবেন।