বিশ্বের সঙ্গে সংঙ্গতি রেখে লক ইন চায় বিএমবিএ
:: আপডেট: ২০১৯-০৫-২২ ১০:৪৬:৪৩
বর্তমানে পুঁজিবাজারের হট টক হলো প্লেমেন্ট শেয়ারের লক ইনের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে চলছে চুল-ছেড়া বিশ্লেষণ। ব্রোকাররা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আবেদন করেছে লক ইনের সময় বাড়ানোর। আর মার্চেন্ট ব্যাংকারা চায় শিল্পায়নের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে; বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লক ইন। দুটি পক্ষই বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সময়ে দুটি পক্ষই বিএসইসিতে চিঠি দিয়েছে।
বিএমবিএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লক ইনের সময় বাড়ানো হলে; দেশের শিল্পায়নের জন্য ক্ষতি হবে। অন্যদিকে ব্রোকাররা বলছে লক ইনের সময় কম হওয়া এখানে এক ধরণের কৃত্তিম বাজার গড়ে উঠেছে। ফলে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
স্পন্সর ডিরেক্টর বাদে অন্য শেয়ার হোল্ডারদের ক্ষেত্রে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লক ইন চায় সংগঠনটি।
এদিকে বিষয়টি সমাধান করার জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। কমিটির প্রতিবেদনের পর জনমত জরিপ করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বিএসইসি।
এদিকে এই বিষয়ে গত ১৩ মে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের আলোকে বিএসইসিতে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১৩ মে বিএমবিএর পক্ষ থেকে বিএসইসিতে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বিশ্বের কোন দেশে কত দিন লক ইন; সেই বিয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএমবিএর সাধারণ সম্পাদক ও এমটিবি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ সান বিডিকে বলেন, দেশের শিল্পায়নের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে প্লেসমেন্ট শেয়ারের লক ইন রাখা প্রয়োজন। প্লেসমেন্টহোল্ডাররা একটি কোম্পানির শুরুতে ঝুকি নিয়ে বিনিয়োগ করছে। অন্যদিকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই এই শেয়ারে ৬ মাস থেকে এক বছর লক ইন থাকে।
এ বিষয়ে বিএমবিএর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ সান বিডিকে বলেন, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশের আইন-কানুন দেখে; আইন প্রণয়োন করে। দেশের শিল্পায়ন এবং পুঁজিবাজারের স্বর্থের কথা বিবেচনা করে বিএসইসিকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন সান বিডিকে বলেন, প্লেসমেন্টর বিষয়ে এখন আমাদের আর কোনো কথা নেই। ২৯ এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে; বিএসইসির চেয়ারম্যান যে বক্তব্য দিয়েছেন সেদিকেই তাকিয়ে আছি আমরা।
প্লেসমেন্ট শেয়ার কোন দেশে কত দিন লক ইন
ভারতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার লক ইন থাকে এক বছর। এটি সেবির ইস্যু অব দ্যা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ডিসক্লোজার রিকুয়ারম্যান্স রেগুলেশন-২০০৯ দ্বারা করা হয়েছে।
চায়নাতেও একই সময় লক ইন থাকে। তবে এখানে উদ্যোক্তাদের শেয়ার লক ইন থাকে ৪৮ মাস বা ৪ বছর।
থাইল্যান্ডে প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার লক ইন থাকে এক বছর। তবে এখানে সর্বচ্চো ৫০ জন ব্যাক্তি প্লেসমেন্ট হোল্ডার হতে পারে।
মালয়েশিয়ায় প্লেসমেন্ট শেয়ার লক ইন থাকে ৬ মাস।
ইন্দোনেশিয়ায় লক ইন ৬ থেকে ৮ মাস।
শ্রীলংকায় তালিকাভুক্তির পর থেকে এক বছর শেয়ার লক ইন থাকে।
মায়ানমার প্লেসমেন্ট হোল্ডারদের শেয়ার লক ইন থাকে তিন থেকে ছয় মাস। তালিকাভুক্তর পর থেকে এই দিন গণনা শুরু হয়।
পাকিস্তানে এক বছর। এখানে প্রথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আবেদনের শেষ দিন থেকে এই সময় কার্যকর হয়। তবে গ্রীণ ফেকটরি হলো বাণিজ্যিক উৎপাদনের শুরু দিন থেকে এর গণনা শুরু হয়।
সিঙ্গাপুরে তালিকাভুক্তির পর থেকে ছয় মাস বা এক বছর পর্যন্ত প্লেসমেন্টহোল্ডারদের শেয়ার লক ইন থাকে।
হংকং এ প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার ছয় মাস শেয়ার লক ইন থাকে।