৪ শতাংশ সুদে পুঁজিবাজার সাপোর্ট ফান্ড পাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৯-০৫-২২ ১০:৪২:১৫
পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট সমাধান ও বাজারকে সাপোর্ট দিতে ৮৫৬ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। তবে এই ফান্ড পাচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। এই টাকা সরাসরি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার কথা বলেছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, প্রথম দিকে এটি ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হলে;বাজারের তেমন উপকার হয়নি। অন্যদিকে কয়েক দফা সময় বাড়ানো হলেও বিনিয়োগকারীরা এই টাকা নেয়নি। ফলে এই বাজার বৃহৎ আকারে পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের না দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং আইসিবিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মাধ্য পুঁজিবারকে সাপোর্ট দিবে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র মতে, গতকাল মঙ্গলবার আইসিবির কাছে পুঁজিবাজার সাপোর্ট ফান্ড হিসেবে ৮৫৬ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইসিবি এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আজ থেকে এই টাকা দিয়ে শেয়ার কিনতে পারবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উধ্বতন কর্মকর্তা সান বিডিকে বলেন, টাকা ইতোমধ্যে আইসিবির হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি চিঠিও আইসিবিকে দেওয়া হয়েছে। আইসিবি চাইলে আগামীকাল (বুধবার) থেকেই টাকা বাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র এবং ফান্ড সংক্রান্ত কমিটির আহবায়ক সাইফুর রহমান সান বিডিকে বলেন, পুঁজিবাজারকে বৃহৎ আকারে সাপোর্ট দিতে ৮৫৬ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। সরকার আইসিবিকে দিয়েছে; আইসিবি থেকে চাইলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিয়ে পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে পারবে।
তিনি বলেন,মোট ৮৫৬ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। এই টাকা থেকে আইসিবি এবং তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে ৭৬০ কোটি টাকা সরাসরি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। আর বাকী ৯৬ কোটি টাকা দেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের।
এর আগে গত ২ মে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে এমন একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে চলমান পুঁজিবাজারের লেনদেনে নিম্মগতির ধারা প্রতিরোধের লক্ষ্যে সুদ ও আসল হিসেবে আদায়কৃত মোট আটশত ছাপ্পান্ন কোটি টাকা আবর্তনশীল ভিত্তিতে পূন:ব্যবহার এবং তিনটি বিষয়ের নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের সম্মতি দেয়া হলো।
১. তহবিলের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হলো এবং শেষ বিতরণকৃত ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ৩১ মার্চ এ সময় পর্যন্ত।
২. এ তহবিল থেকে আইসিবির মাধ্যমে বিতরণকৃত ঋণের সুবিধাভোগী ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারী ছাড়াও বাজারের মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ ইত্যাদি মূলধন বাজারের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট সমাধানে বিএসইসি, আইসিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত তদারকি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হলো।
৩.চলমান অবস্থার অনুবৃত্তিক্রমে তহবিলের সামগ্রিক তদারকি, তদারক কমিটির উপর থাকবে।
গত ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া লাগাতার দরপতন ১৪তম সপ্তাহে গড়িয়েছে। স্মরণকালের মধ্যে এত দীর্ঘ দরপতনের রেকর্ড নেই। এর আগে ২০০৮ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত টানা ১১ সপ্তাহ দরপতন হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ২০১২ সালের ৫ মার্চ প্রণোদনা স্কীমের আওতায় ৯০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছিল। যা ৩ কিস্তিতে ৩০০ কোটি টাকা করে আইসিবির মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের মধ্যে বিতরন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও আইসিবির সমন্বয়ে গঠিত ‘তদারকি কমিটি’ তত্ত্বাবধানে এই ফান্ড বিতরন করা হয়। যার মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তীর্তে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছিল।