ঘোষণা ছাড়া শেয়ার বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ডিএসই

পুঁজিবাজার ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-০৫-২২ ১৫:৪৫:৫৫


পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যে যেসকল কোম্পানি পূর্ব ঘোষণা ছাড়া মেয়ার বিক্রি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)।

বুধবার ডিএসই এর সমন্বয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে জানানো হয়- ইতিমধ্যে ডিএসইর সিআরওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কারা ঘোষাণা ছাড়া শেয়ার বিক্রি করেছে। সিআরও এর তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেবে ডিএসই।

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন,যেসব উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা ঘোষণা না দিয়ে শেয়ার বিক্রি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেআইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলক্ষে ওইসব উদ্যোক্তা/পরিচালকদের তালিকা খুজেঁ বের করতে ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া না জানিয়ে শেয়ার বিক্রি করে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা কত টাকা রাজস্ব ফাকিঁ দিয়েছে, সিআরও সেই সেই তথ্যও বের করবেন। এরপরে ওইসব উদ্যোক্তা/পরিচালকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ি সকল পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিএসইসিকে অবহিত করা হবে।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) মধ্যে একটি সমন্বয় কমিটি তৈরী হয়েছে। যে কমিটি আগামিতে একসঙ্গে কাজ করবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে না জানিয়ে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা শেয়ার বিক্রি করতে পারলেও এখন আর সেটা সম্ভব না। কারণ এরইমধ্যে এই সমস্যারোধে বিএসইসি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে ডিএসই, ডিবিএ, সিএসই ও বিএমবিএ’র মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সবার মধ্যে সমন্বয় তৈরী করা। যাতে আগামিতে শেয়ারবাজার নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব না দিয়ে, সমন্বয় করে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। আগামিতে যেকোন বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ৪টি সংগঠনের পক্ষে একটি প্রস্তাব দেওয়া হবে। এলক্ষ্যে ডিএসইর পক্ষে আমার (ইমন), ডিবিএর পক্ষে শাকিল রিজভী, সিএসইর পক্ষে ছায়েদুর রহমান ও বিএমবিএর পক্ষে নাসির চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ৩জন করে প্রতিনিধি থাকবে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিনিধি ছাড়াও চার প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

পুজিবাজার সংশ্লিষ্ট যেকোন প্রস্তাব দেওয়ার আগে সমন্বয় কমিটির মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন ইমন। নিজেরা ঠিক করার পরে একটি প্রস্তাব দেওয়া হবে। যাতে কোন ভেদাভেদ তৈরী না হয়। অন্যথায় ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি তৈরী হয়। যা শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ইমন বলেন, গত কিছুদিনে অনেক সংস্কারের পরে পুজিবাজারে গতি পাচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোথাও কোন গ্যাপ আছে। সেটা সমন্বয়ের অভাব বলেই আজকের সভায় মনে হয়েছে। তাই আগামিতে ডিএসই, ডিবিএ, সিএসই ও বিএমবিএ একসাথে কাজ করবে। সবার দাবি ও উদ্দেশ্য হবে এক। সবাই একই সুরে কথা বলব।

তিনি বলেন, পুজিবাজারে অনেকে ২ শতাংশ শেয়ার ধারন না করেও পরিচালক পদে বসে রয়েছে। এ সমস্যারোধে কমিশন এরইমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। তারপরেও এ বিষয়ে আজকে গঠিত কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। এছাড়া শেয়ারবাজারে উন্নয়নে এক্সটেনশন অফিস ২ কিলোমিটারের বাহিরেও খোলার অনুমতির জন্য কমিশনে দাবি জানানো হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিএসইসি গত ২৯ এপ্রিল অনেকগুলো সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। কমিশন উদ্যোক্তা/পরিচালকদের পৃথকভাবে ২ শতাংশ ও সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারন নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ, অযৌক্তিক বোনাস শেয়ার ঘোষণা বন্ধ, উদ্যোক্তা/পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি নিয়ন্ত্রণে ব্লক মডিউল তৈরী ইত্যাদি পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন থেকে ইচ্ছা করলেই উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা শেয়অর বিক্রি করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে পুজিবাজারের দূর্বল দিক নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সবকিছু মিলিয়ে কমিশন বেসিক জায়গায় সংস্কার করেছে। খায়রুল হোসেনের এই উদ্যোগের সঙ্গে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।

শাকিল রিজভী বলেন, আমরা বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার চাইতেই পারি। তবে শেয়ারের দর উঠা-নামার জন্য কাউকে দায়ী করা ঠিক হবে না। সারাবিশ্বের শেয়ারবাজারে শেয়ার দর উঠা-নামা করে। সেটা অনেক কারনেই হতে পারে। এক্ষেত্রে বিএসইসিকে দায়ী করা ঠিক হবে না। সূচকের উঠা-নামায় বিএসইসির ভূমিকা থাকে না। তাদের কাজ আইন-কানুন ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখা। শেয়ারের দর ঠিক করে বিনিয়োগকারী।

সান বিডি/এসকেএস