আমদানি করা গুঁড়া দুধের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের দাবি

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৬-২২ ১৫:১২:৩৫


২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি করা গুঁড়া দুধের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার (২২ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনের পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ জানানো হয়।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ‘দুধের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে দেশের খামারিরা রাগে-ক্ষোভে রাস্তায় দুধ ঢেলে দিয়েছিল। তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমরাও প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে রাস্তায় দুধ ঢাললাম।’

২০১৯-২০ প্রস্তাবিত বাজেটে কনসেশনারি কাস্টমস ডিউটি ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এটা দুগ্ধ খামারিদের তেমন কাজে আসবে না বলে দাবি করেন তারা।

ইমরান বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে গুঁড়া দুধের আমদানি শুল্ক বাড়ানো হোক। কারণ মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ দুধ এখন আমরা দেশেই উৎপাদন করি। গত ৭ বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে তিনগুণ। এ অবস্থায় আমদানি শুল্ক পর্যায়ক্রমে কিছুটা বাড়িয়ে দেশীয় দুগ্ধ শিল্পকে প্রণোদনা ও সরকারি সহযোগিতা বাড়ানো হোক। তাহলে দেশের দুগ্ধ শিল্প বেঁচে যাবে এবং বিকাশ লাভ করবে।’

তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ডেনমার্ক তাদের দেশের দুগ্ধ খামারিদের হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের দুগ্ধচাষিরা ভর্তুকি পায় না। ওইসব দেশ থেকে গুঁড়া দুধ আমদানির মাধ্যমে দেশের দুগ্ধচাষিদের অসম প্রতিযোগিতা এবং ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে।’

এ ছাড়াও নতুন বড় বিনিয়োগে বাধার ফলে দেশীয় বাজার ধ্বংস হয়ে গেলে উচ্চমূল্যে দুধ কিনতে হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়নের (মিল্ক ভিটা) চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাকিবুল রহমান টুটুলসহ অন্য নেতাকর্মী এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

এ সময় বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো- নিম্নমানের ভর্তুকিপ্রাপ্ত গুঁড়া দুধের ওপর এন্টি ডাম্পিং ট্যাক্স আরোপ ও আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে উন্নীত করা; বিগত ১৫ বছরে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে খামারিদের তরল দুধের ন্যায্য দাম সরকার থেকে নিশ্চিত করা; তরল দুধের সঠিক বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; দুগ্ধ প্রসেসিং কোম্পানির সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দামে তরল দুধের দাম সমন্বয় সাধন; এলাকাভিত্তিক খামারিদের দুধ সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা তৈরি; ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার থেকে দায়িত্ব নিয়ে সচেতনতামূলক টিভিসি প্রোগ্রাম; গো-খাদ্য আমদানিতে সব শুল্ক প্রত্যাহার; আধুনিক খামারভিত্তিক বৈদেশিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে সব শুল্ক প্রত্যাহার; বাণিজ্যিক নয়, বরং কৃষির আওতায় দুগ্ধ খামারের বিদ্যুৎ ও পানির বিল আনা এবং পোল্ট্রি ও মৎস শিল্পের মতো দুগ্ধ খামারিদের আগামী ২০ বছরের জন্য আয়কর মুক্ত সুবিধা দেয়া হোক।